Mamata Banerjee Murshidabad : জাফরাবাদে নিহত বাবা-ছেলের পরিবার কলকাতায়, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী

13

ডিজিটাল ডেস্ক, ৫ মে: ধূলিয়ার অশান্তির পর এই প্রথম মুর্শিদাবাদ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ধূলিয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করা এবং জাফরাবাদে নিহত বাবা-ছেলের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ (Mamata Banerjee Murshidabad)। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আগমনের আগেই ওই নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মুর্শিদাবাদ ছেড়ে কলকাতায় চলে গিয়েছেন। এই ঘটনার পিছনে বিজেপির ‘ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্ত’ রয়েছে বলেই অভিযোগ উঠেছে।

ডুমুরজলায় দাঁড়িয়ে এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, যারা দেখা করতে ইচ্ছুক, তাদের পাশে সরকার সর্বদা রয়েছে এবং থাকবেও—এই আশ্বাস আরও একবার পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

সোমবার মুর্শিদাবাদ সফরে রওনা হওয়ার আগে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের হেলিপ্যাডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ধূলিয়ান থেকে দুই পরিবারকে নিয়ে চলে এসেছেন, ঠিক আছে, চলে আসুন। যার যা ইচ্ছা। আমরা তাঁদের আর্থিক সাহায্য দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তাঁরা তা গ্রহণ করেননি। অথচ বিজেপি নেতাদের দেওয়া সাহায্য তাঁরা নিয়েছেন। যদি কেউ সাহায্য নিতে না চান বা দেখা করতে না আসেন, তা হলে আমাদের আর কিছু করার নেই। তবে যাঁরা দেখা করতে আসবেন, তাঁদের সঙ্গে অবশ্যই কথা বলব।”

এই বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন যে, রাজনৈতিক প্ররোচনার ঊর্ধ্বে উঠে সরকারের মানবিক সহায়তা দেওয়ার মানসিকতা রয়েছে, তবে কারও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে জোর করে পাল্টানো সম্ভব নয়।

সামশেরগঞ্জে সম্প্রতি যে দাঙ্গা-অশান্তির ঘটনা ঘটে, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ সমস্ত শীর্ষ আধিকারিকদের ঘটনাস্থলে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাঁর স্পষ্ট বার্তা ছিল—অপরাধীরা যাতে কোনওভাবেই ছাড়া না পায়। সেই নির্দেশ মেনে চলছে ধারাবাহিক ধরপাকড়। পাশাপাশি, দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হয়েছে কড়া পদক্ষেপ।

তৎকালীন পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “এখন সামশেরগঞ্জ যাওয়ার উপযুক্ত সময় নয়, পরিস্থিতি শান্ত হলে তবেই যাব।” রাজ্যপাল সেই সময় তাঁর অনুরোধ না শুনলেও, মুখ্যমন্ত্রী নিজের কথা রেখেছেন। অবশেষে, পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর সোমবার তিনি রওনা হন মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে। এই দিন ডুমুরজলায় দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, “মুর্শিদাবাদে আগেই যেতে পারতাম। কিন্তু শান্তি স্থাপন না হওয়া পর্যন্ত গিয়ে স্থানীয়দের বিরক্ত করতে চাইনি। এখন পরিস্থিতি অনেক দিন ধরে স্থিতিশীল। তবে মাঝে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের মতো পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল, যা শেষ করেই আজ আমি যাচ্ছি।”

মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ানে গিয়ে সাম্প্রতিক অশান্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। তাঁদের মধ্যে আস্থা ও ভরসা জোগাতে চান তিনি। ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণ সহ প্রয়োজনীয় সবরকম প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়গুলো নিয়েই তিনি প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বিস্তারিত পর্যালোচনা করবেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিতে রয়েছে সুতির ছাবঘাটি ময়দানে একটি বড় জনসভা, যেখানে উপভোক্তাদের জন্য একাধিক সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি চালু হবে। ওই সভা থেকেই বহু সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করার কথা রয়েছে।

Comments are closed.