ডিজিটাল ডেস্ক, ৬ মে: পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি হামলার পর যুদ্ধের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিল ভারত। ৭ মে থেকে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে অসামরিক মহড়া। তার আগে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Modi Doval Meet)। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক প্রতিক্রিয়ার জল্পনার মাঝেই এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠককে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলা এই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা সরকারি ভাবে প্রকাশ না হলেও, মনে করা হচ্ছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে একের পর এক ম্যারাথন বৈঠক চলছে। বিগত কয়েক দিনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, এনএসএ অজিত ডোভাল এবং তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে পৃথকভাবে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এমন পরিস্থিতিতে মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ডোভালের সঙ্গে ফের এই বৈঠক রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনার সৃষ্টি করেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিরা ধর্ম জিজ্ঞাসা করে নির্মমভাবে হত্যা করে ২৫ জন পর্যটক ও এক স্থানীয় বাসিন্দাকে। হামলার পিছনে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ মদতের বিষয়টি ইতিমধ্যেই পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। এই বর্বর ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—হামলাকারীরা এবং যাঁরা এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছেন, তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্তরেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। যুদ্ধপরিস্থিতির সম্ভাবনা মাথায় রেখে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই দেশের ২৭টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অসামরিক মহড়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেই মহড়া শুরু হচ্ছে বুধবার, ৭ মে।
গত সপ্তাহেই কেন্দ্র সরকার দেশের তিন বাহিনী—স্থল, নৌ ও বায়ুসেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। আরব সাগরে ইতিমধ্যেই নৌসেনা শুরু করেছে সামরিক মহড়া, পাশাপাশি বায়ুসেনা ও স্থলসেনাও জোরকদমে অনুশীলন চালাচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চলে। এরই মধ্যে একাধিক দফায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। কেন্দ্রের এই তৎপরতা এবং সমন্বিত প্রস্তুতিকে যুদ্ধের প্রাথমিক ধাপ হিসেবেই দেখছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা ও কূটনৈতিক মহল।