ডিজিটাল ডেস্ক, ১৭ মে : পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের বিস্তীর্ণ এলাকায় সক্রিয় একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা বিভাগ। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর এই ষড়যন্ত্র ভাঙতে পুলিশ সক্রিয়ভাবে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের অংশ হিসেবে হরিয়ানার এক মহিলা ইউটিউবার-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে (Pakistan Spy Arrested)। তদন্তকারীদের দাবি, অভিযুক্তরা পাকিস্তানের পক্ষ থেকে গুপ্তচরবৃত্তি চালাত এবং সীমান্তের ওপার থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ পেত গোপন তথ্য পাচারের বিনিময়ে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন জ্যোতি মালহোত্রা, হরিয়ানার একজন ইউটিউব ব্লগার, যিনি মূলত ভ্রমণ সংক্রান্ত কনটেন্ট তৈরি করেন। তিনি নিউ দিল্লিতে পাক হাই কমিশনের সদস্য এহসান উর রহিম ওরফে দানিসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং ২০২৩ সালে তাঁর উদ্যোগে ভিসা নিয়ে পাকিস্তান সফর করেন। গত মঙ্গলবার ভারত সরকার দানিসকে ‘অযাচিত’ ঘোষণা করে দেশ থেকে বহিষ্কার করেছে। অভিযোগ রয়েছে যে, দানিস ছাড়াও জ্যোতির যোগাযোগ ছিল ‘পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভ’ (PIO) বা গুপ্তচর বিভাগের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাটের মতো সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পাক এজেন্টদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। এছাড়া, শাকির ওরফে রানা শাহবাজ নামে এক পাক এজেন্টের নম্বর ‘জাঠ রানধাওয়া’ নামে তাঁর ফোনে সেভ করা ছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
জ্যোতির পাশাপাশি তদন্তকারীরা পাঞ্জাবের বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সী গুজালাকে গ্রেফতার করেছেন। জানা গেছে, চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি পাকিস্তানে গিয়েছিলেন, আর তাঁর ভিসার ব্যবস্থা করেছিলেন দানিস। গুজালার সঙ্গে দানিসের সম্পর্ক বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে গড়ায়, এবং সেই সূত্রে তাঁকে ধাপে ধাপে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। পাকিস্তান থেকে ফিরে আসার পর, গত ২৩ এপ্রিল গুজালা তাঁর বন্ধু বানু নাসরিনা এবং আর এক মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে পাক হাই কমিশনে যান। এরপর দানিস তাঁদেরও পাকিস্তান যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন পাঞ্জাবের মালেরকোটলার ইয়ামিন মোহাম্মদ, হরিয়ানার কৈথালের দেবিন্দর সিং ধিলন—যিনি একজন শিখ ছাত্রনেতা—এবং হরিয়ানার নুহের আরমান। তদন্তে উঠে এসেছে, তাঁরা প্রত্যেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন এবং দেশের গোপন তথ্য পাচারের কাজে লিপ্ত ছিলেন।
Comments are closed.