Iran Israel Conflict : ইজরায়েলি সেনার হামলায় ইরানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৮৫!

13

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৮ জুন : ইরানের ওপর হামলার মাত্রা আরও তীব্র করেছে ইজরায়েল। পরস্পরের বিরুদ্ধে একের পর এক মিসাইল হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন দুই দেশের সাধারণ নাগরিক। মার্কিন মানবাধিকার কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ইরানে প্রাণহানি ঘটেছে ৫৮৫ জনের (Iran Israel Conflict)। বুধবার সকালেও দুই দেশ পরস্পরকে লক্ষ্য করে মিসাইল নিক্ষেপ করেছে, যার ফলে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। অবস্থার জটিলতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তেহরানের বহু বাসিন্দা শহর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন।

গত শুক্রবার ইজরায়েল ইরানের ওপর প্রথম হামলা চালায়, তাদের দাবি ছিল যে ইরান পরমাণু বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার অজুহাতে তারা এই হামলা চালায়। সাধারণত নিহতের সংখ্যা প্রকাশ্যে আনতে সংকোচ করে ইরান, তবে সোমবার দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয় যে ইজরায়েলের হামলায় ২২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধের ষষ্ঠ দিনে আমেরিকার মানবাধিকার কমিশন ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে ইজরায়েলের হামলায় ৫৮৫ জনের মৃত্যু এবং ১৩২৬ জন আহত হওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। আহতদের মধ্যে ২৩৯ জন সাধারণ নাগরিক ও ১২৬ জন নিরাপত্তাবাহিনীর জওয়ান রয়েছেন। হামলার পাল্টা জবাবে এবার সুপারসনিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে ইরান, যা যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করছে। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে, আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

ইরান ইজরায়েলের রাজধানী তেল আভিভকে নিশানা করেছে, যদিও হামলার ফলে সেখানে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায়নি। তবে তেহরানে ইজরায়েলের হামলা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি করেছে, যার প্রভাব ক্রমেই গুরুতর হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি এতটাই সংকটজনক যে স্থানীয় ও বিদেশি নাগরিকরা তেহরান ছেড়ে পালাচ্ছেন, রাস্তায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শহরের পেট্রোল পাম্পগুলিতে গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে, যা পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। সম্প্রতি, ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানবাসীদের শহর ছাড়ার বার্তা দিয়েছিলেন, যার পর থেকেই বড় মাপের হামলার আশঙ্কা আরও জোরালো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গত শুক্রবার ইজরায়েল ইরানের সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালায়। এই আক্রমণের ফলে ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের প্রধানসহ দুই শীর্ষ সেনা কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি ৯ জন পরমাণু বিজ্ঞানীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে ইজরায়েল, যা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলেছে। এই ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের উত্তাপ নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ইজরায়েলের দাবি, ইরান পরমাণু বোমা তৈরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল এবং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই তারা এই হামলা চালিয়েছে। তীব্র সংঘর্ষের ফলে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে, পরিস্থিতি নজরে রাখছে বিভিন্ন দেশ।