ডিজিটাল ডেস্ক ২০জুনঃ ইরানে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত আমেরিকা! এমনকী তেহেরানকে নিশানা করার পরিকল্পনায় গোপনে নাকি সায়ও দিয়ে ফেলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু হামলার চূড়ান্ত ছাড়পত্র তিনি দেননি। এমন কথা আগেই শোনা যাচ্ছিল। এবার হোয়াইট হাউসের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে হামলার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প (Tramp Accompanied Israel)।
যুদ্ধের সপ্তম দিনে ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলা আরও জোরালো হয়েছে। তেল আভিভের কাছে একটি বহুতল ও কিছু বাড়িতেও আছড়ে পড়েছে মিসাইল। ইজরায়েলি বাহিনীরও দাবি,ইরানের আরও একটি পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। এই কেন্দ্রটিতেই রয়েছে হেভি ওয়াটার পরমাণু চুল্লি।
ইজরায়েল ও আমেরিকার প্রবল চাপের মুখে পড়ে এদিন অনড় অবস্থান থেকে সরে এসেছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। অবশেষে জানিয়েছেন, ইউরোপের দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে শুক্রবার জেনিভায় বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। ফলে কূটনৈতিক স্তরে সমাধানের নয়া এক প্রচেষ্টার ইঙ্গিতও মিলছে। ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে,জেনিভার বৈঠকে থাকবেন ব্রিটেন,ফ্রান্স ও জার্মানির বিদেশমন্ত্রীরা। বৈঠকে অংশ নেবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিকরাও। তবে বৈঠকের এই তোড়জোড়ের মধ্যেই অবশ্য হামলা ও পাল্টা হামলার পর্ব অব্যাহত। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে পড়া সোরোকা মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎকরা জানিয়েছেন, এয়ার রেড সাইরেন সবে মাত্র থেমেছিল। তা সত্ত্বেও কান ফাটা শব্দে আচমকা মিসাইল আড়ছে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মূলত পুরনো সার্জারি বিল্ডিংটি। যুদ্ধের আবহেই সম্প্রতি এই ভবনটি খালি করে দেওয়া হয়েছিল। ফলে বড় ধরনের বিপদ এড়ানো গিয়েছে। ইরানের সরকারি সংবাদ মাধ্যমের যদিও দাবি, হাসপাতাল নয় বরং পাশেই ইজরায়েল সেনার দপ্তরকে নিশানা করা হয়েছিল।
ট্রাম্পের এক বার্তার উদ্ধৃতি দিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট সাংবাদিকদের বলেছেন, “অদূর ভবিষ্যতে ইরানের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বা নাও পারে। দুই দিকেই যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকায়, আগামী দুই সপ্তাহের ভিতরে আমি সিদ্ধান্ত নেব যে আমি এটা করব কিনা।”
সেই সঙ্গেই লিভিট জানিয়েছেন, ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক পথে সমাধানের জন্য হাঁটতে প্রস্তুত। তবে তাঁর আসল লক্ষ্যই হল যেনতেন প্রকারেণ তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে আটকানো। তাঁর কথায়, ”প্রেসিডেন্ট সব সময়ই কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী। তিনি শান্তিরক্ষার মূল কাণ্ডারী। যদি এক্ষেত্রে কূটনৈতিক পথে সমস্যা মাধানের সুযোগ থাকে উনি সেটা নিতে প্রস্তুত। কিন্তু প্রয়োজন পড়লে বলপ্রয়োগ করতেও উনি ভীত নন।”
আমেরিকার সমর্থনেই ইজ়রায়েল হামলা শুরু করেছিল ইরানে। শুক্রবারের হামলার আগে ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহুর দীর্ঘ ক্ষণ ফোনে কথাও হয়েছিল। কিন্তু আমেরিকা এবং ইজ়রায়েলের যৌথ চাপের মুখেও নতিস্বীকার করতে নারাজ ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। তিনি পাল্টা হামলা এবং ভয়ঙ্কর পরিণতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ফলে পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট ক্রমে আরও জটিল হচ্ছে।