ডিজিটাল ডেস্ক, ২৮ জুন : মাত্র ৪২ বছর বয়সে না-ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন ‘কাঁটা লাগা’ খ্যাত মডেল ও অভিনেত্রী শেফালি জারিওয়ালা (Shefali Jariwala Death)। শুক্রবার রাতে তাঁর আকস্মিক মৃত্যু সংবাদে শোকস্তব্ধ বলিউড এবং অনুরাগী মহল। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তবে এই অকাল প্রয়াণের পেছনে প্রকৃত কারণ ঘিরে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন ও জল্পনা।
২০০২ সালে ‘কাঁটা লাগা’ রিমিক্স গানে ঝড় তুলে রাতারাতি জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছিলেন শেফালি জারিওয়ালা। তাঁর নাচ, অভিব্যক্তি ও স্টাইল আজও দর্শকের স্মৃতিতে ভাসমান। তবে সেই সাফল্যের পরেও বলিউডে দীর্ঘস্থায়ী কেরিয়ার গড়ে তুলতে পারেননি তিনি। কিছু হিন্দি সিনেমায় ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয়ের পর ধীরে ধীরে রুপালি পর্দা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন।
এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের কঠিন লড়াইয়ের কথা খোলাখুলি জানিয়েছিলেন শেফালি জারিওয়ালা। মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকেই তিনি মৃগী রোগে ভুগতেন। তিনি বলেছিলেন, “পরীক্ষার সময় প্রচণ্ড মানসিক চাপে থাকতাম, তখনই প্রথম খিঁচুনির সমস্যা দেখা দেয়। মৃগীর কারণে আমি ডিপ্রেশনে চলে যেতাম, আবার সেই ডিপ্রেশন থেকেই খিঁচুনি আরও বেড়ে যেত। এই দুই সমস্যা একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত ছিল।”
মৃগীর মতো জটিল রোগের কারণে শেফালি জারিওয়ালাকে জীবনের বহু সুযোগ হাতছাড়া করতে হয়েছিল। পারফর্ম করার সময় হঠাৎ খিঁচুনি শুরু হতে পারে—এই আশঙ্কা থেকেই তিনি সব কাজ গ্রহণ করতেন অত্যন্ত বেছে-বুঝে। নিজেকে আঘাতের সম্ভাবনাও ছিল, তাই শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিতেন সাবধানতার সঙ্গে। তবে সৌভাগ্যবশত, দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও যত্নের ফলে তাঁর এই রোগ একপর্যায়ে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে।
মৃত্যুর মাত্র দু’দিন আগে একটি ফটোশ্যুটে অংশ নিয়েছিলেন শেফালি জারিওয়ালা, যার ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে বারবার। এমন উজ্জ্বল ও সচল উপস্থিতির পর হঠাৎ করে তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে বিস্মিত গোটা বলিউড সহ তাঁর অনুরাগীরা। কীভাবে এত অপ্রত্যাশিতভাবে এই মর্মান্তিক পরিণতি ঘটল, তা ঘিরে শুরু হয়েছে বিস্তর চর্চা ও জল্পনা।
শেফালি জারিওয়ালার আকস্মিক প্রয়াণে বলিউডজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোক। একের পর এক সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব এবং অনুরাগীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকবার্তা জানাচ্ছেন, স্মরণ করছেন তাঁর কাজ এবং ব্যক্তিত্বকে। শেফালির পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্বামী এবং এক পুত্রসন্তান—তাঁর চলে যাওয়া তাঁদের জীবনে অপূরণীয় ক্ষতি।