ডিজিটাল ডেস্ক ৩০জুনঃ কসবা ল কলেজে নারকীয় ঘটনায় নতুন মোড়। কলেজটি ডে কলেজ। সাধারণত,বিকেল ৪টের মধ্যেই ছুটি হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও ২৫শে জুন বুধবার বিকেল ৪টের পর কলেজে ১৭ জন কেন ছিলেন, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই ১৭ জনের মধ্যে কেউ কি কিছু সন্দেহজনক দেখেছিল, না কি অন্য কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁরা থেকে গিয়েছিলেন,তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে, ক্রমাগত যত দিন এগোচ্ছে এই কসবা কাণ্ডে। এই গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশি জেরার মুখে গুরুত্বপূর্ণ দাবি করলেন ধৃত নিরাপত্তারক্ষী । পুলিশি সূত্রের খবর,জেরায় ধৃত দাবি করেছেন, অভিযুক্তরা তাঁর মোবাইল কেড়ে নিয়েছিল,যাতে তিনি কাউকে খবর দিতে না পারেন (Kasba Gangrape Case)।
গত বুধবার কসবায় সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে এক আইনের ছাত্রীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রবিবার অভিযুক্ত প্রমিত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে হাওড়ার চ্যাটার্জিহাটের বাড়িতে ‘সিট’তল্লাশি চালায়। এছাড়াও অন্য দুই অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র ও জায়েব আহমেদের বাড়িতে এক দফা তল্লাশি হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, প্রথমে বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’-এর পাঁচজন সদস্য কাজ শুরু করেন। এদিন ‘সিট’এর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন ন’জন ‘সিট’সদস্য তদন্ত করছেন। নির্যাতিতা ছাত্রী ও তিন অভিযুক্তর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে । ইতিমধ্যেই দু’জনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের বয়ানের মিল খুঁজতে কাজ চলছে। বাকিদেরও শীঘ্রই ডেকে পাঠাবে তদন্তকারী দল।
প্রসঙ্গত,গত বুধবার কসবার ল কলেজে এক ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র-সহ মোট ৪ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে,তদন্তে নিত্যনতুন তথ্য উঠে আসায় পুরো ঘটনা ক্রমশ জটিল হচ্ছে।এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র,তার দুই সঙ্গী জায়েব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ছাত্রীকে ধর্ষণ চলাকালীন মিনিট দু’য়েকের দু’টি ভিডিও তোলা হয় বলে প্রথমে ধৃতরা দাবি করে। ধর্ষণের সময় ছাড়াও তার আগে ছাত্রীকে বিবস্ত্র করা ও তার যৌন নিগ্রহের আরও কয়েকটি ভিডিও ও ছবি তোলা হয় বলে সন্দেহ পুলিশের। তদন্তে ‘সিট’-এর সদস্যরা জানতে পারেন,যাবতীয় অশ্লীল ভিডিও ও ছবি অভিযুক্তরা নিজেদের মোবাইল ছাড়াও অন্য ল্যাপটপ ও পেন ড্রাইভে কপি করে রেখেছে।
এছাড়াও গত বুধবার রাতে কলেজে ছাত্রীর গণধর্ষণের যে ভিডিওগুলি তোলা হয়,সেগুলি একটি সোশাল মিডিয়ার বিশেষ গ্রুপে শেয়ার করা হয়েছিল বলে খবর আসে পুলিশের কাছে। পুলিশ সেই তথ্য যাচাই করছে। নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্টে উঠে এসেছে গুরুতর শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন। শরীরে পাওয়া গেছে যৌন হেনস্থার স্পষ্ট প্রমাণ, কামড়ের দাগ এবং নখের আঁচড়।
ঘটনার দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একটি মিটিংয়ের নাম করে তাঁকে সন্ধ্যে পর্যন্ত কলেজে অপেক্ষা করিয়ে অভিযুক্তরা তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পুলিশ ইতিমধ্যে ধৃতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ সংগ্রহে কাজ চালাচ্ছে।