ডিজিটাল ডেস্ক ৪ঠা জুলাইঃ মোদি সরকারের সঙ্গে শিল্পমহলের সম্পর্কে কি চিড় ধরেছে? আস্থার অভাব ঘটছে? সেরকমই যেন ইঙ্গিত পাওয়া গেল প্রথম সারির এক বণিকসভার বৈঠকে। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রাজীব মেমানি বৃহস্পতিবার বললেন,‘দেশের আর্থিক উন্নতি এবং বৃদ্ধিহার অব্যাহত রাখতে সবার আগে দরকার সরকারের সঙ্গে শিল্পমহলের আস্থা এবং বিশ্বাসের সম্পর্ক। এই সম্পর্ক আরও ভালো করতে হবে।’ শিল্পকর্তা দেশের আর্থিক বৃদ্ধিহারের জন্য একঝাঁক দাওয়াইও দিয়েছেন কেন্দ্রকে। তাঁর আশা, এই দাবিগুলি সরকার পূরণ করবে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বিজেপি বিরোধী দলগুলি বারবার সাধারণ ও প্রান্তিক মানুষের সুরাহার জন্য জিএসটির বোঝা কমানোর যে দাবি তুলে এসেছে, তাতেই সিলমোহর দিয়েছেন সিআইআই কর্তা। তিনি সাফ বলেছেন, ‘প্রান্তিক মানুষের থেকে জিএসটির বোঝা কমাতে হবে(GST Exepmtion:)।’
প্রচ্ছন্নভাবে রাজ্যগুলির আর্থিক সুরাহায় কেন্দ্রকে যে উদ্যোগী হতে হবে, এই বার্তা দিয়েছেন সিআইআই সভাপতি। তিনি বলেন, ‘রাজ্যগুলিকেও উন্নয়নকার্যে যুক্ত করা দরকার। আর সেজন্য প্রয়োজন রাজ্যস্তরের আর্থিক সংস্কার। সরকার অবিলম্বে যেন রাজ্যস্তরের আর্থিক কাউন্সিল গঠন করে। যাতে সেই কাউন্সিল প্রতিটি রাজ্যের বাজেট এবং ঋণের বোঝার ভারসাম্য ও সমাধানসূত্র বের করে।’ রাজীব মেমানির প্রস্তাব, ‘কেন্দ্রীয় সরকার স্টেট লেভেল ক্রেডিট রেটিং ব্যবস্থাও চালু করুক।’ জিএসটি নিয়ে বিরোধী দলগুলির লাগাতার আপত্তি বা অভিযোগ নিছক রাজনৈতিক কারণে—এই যুক্তি বারবার সাজিয়ে এসেছে মোদি সরকার এবং বিজেপি। এমনকী, দীর্ঘ সময় ধরে কংগ্রেসের দু’টি স্তরে জিএসটিকে নিয়ে আসার দাবিতেও কান দেয়নি। কংগ্রেসের বক্তব্য, আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এত রকম স্তরের জিএসটি থাকা উচিত নয়। সেই সুরই কিন্তু শোনা গিয়েছে শিল্পকর্তার মুখে।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন,‘এখন দ্বিতীয় জিএসটি যুগ শুরু করার সময় এসেছে। কাঠামো সরল করতে হবে। গরিব মানুষকে আর্থিক সুরাহা না দিলে দেশের আর্থিক বৃদ্ধিহারে জোয়ার আসবে না। কারণ নিত্যপণ্য কেনাকাটায় তাদের যোগদানই সর্বাধিক। আর্থিক বৃদ্ধিহারের অন্যতম প্রধান শর্ত হল, নিম্নবিত্তের লেনদেন বৃদ্ধি। আর সেই লক্ষ্যপূরণে সবার আগে ভারতের আর্থ-সামাজিক পিরামিডের সর্বনিম্ন স্তরে থাকা ২০ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষের নিত্য ব্যবহার্য পণ্য জিএসটি মুক্ত করা। তাহলে নিম্নবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা এবং সঞ্চয় দুটোই বাড়বে।’ সিআইআই সভাপতি মনে করেন, ওই অতিরিক্ত অর্থ কিন্তু শেষমেশ আসবে বাজারেই। এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ কিংবা সাড়ে ৭ শতাংশ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করেন মেমানি। বরং তা ৬.৪ শতাংশ থেকে ৬.৭ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে বলে তাঁর দাবি। সিআইআই মনে করে, কেন্দ্রের উচিত, সেক্টর ধরে ধরে উৎপাদন ও বাণিজ্য কৌশল তৈরি করা। যাতে দেশের ক্ষুদ্র, মাঝারি, বৃহৎ সব শিল্পক্ষেত্রের জন্যই কোনও না কোনও সুযোগ তৈরি হয়। আর এজন্য অগ্রাধিকার কী হওয়া উচিত? কর্মসংস্থান। কারণ এটাই প্রকৃত সমস্যা। প্রতিটি সেক্টরেই কর্মসংস্থান চাই। সেই কৌশল এখনই নিতে হবে।