Mathura Shahi Idgah Disputed Structure : কৃষ্ণ জন্মভূমি মামলায় ধাক্কা হিন্দু পক্ষের!

49

ডিজিটাল ডেস্ক, ৪ জুলাই : শাহী ইদগাহকে ‘বিতর্কিত সৌধ’ নয়, আপাতত মসজিদ হিসেবেই গণ্য করার নির্দেশ এলাহাবাদ হাই কোর্টের মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদকে ‘বিতর্কিত সৌধ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য হিন্দু পক্ষের তরফে করা আবেদন খারিজ করে দিল এলাহাবাদ হাই কোর্ট (Mathura Shahi Idgah Disputed Structure)। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই মুহূর্তে ওই স্থাপনাটিকে মসজিদ হিসেবেই গণ্য করা হবে। এই নির্দেশে মথুরা বিতর্কে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে, যেখানে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় আবেগ জড়িয়ে থাকা ইস্যুতে আদালতের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদ ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে বিতর্ক। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে এলাহাবাদ হাই কোর্টে। সম্প্রতি হিন্দু পক্ষের তরফে একটি আবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ওই স্থাপনাটিকে আর মসজিদ হিসেবে গণ্য না করে ‘বিতর্কিত সৌধ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হোক। সেই যুক্তিতে আগামী দিনে মামলার যাবতীয় নথিতে মসজিদটির উল্লেখ ‘বিতর্কিত সৌধ’ হিসেবে করা হোক—এমন দাবিও জানানো হয় আদালতে। এ প্রসঙ্গে মুসলিম পক্ষ লিখিত আপত্তি জানিয়ে জানায়, বর্তমানে সেই স্থানে একটি মসজিদই রয়েছে, এবং তা নিয়ে কোনও ধরনের বিভ্রান্তি নেই। তাই কোনও ভাবেই ওই স্থাপনাটির সরকারি স্বীকৃতিতে পরিবর্তন আনা উচিত নয় বলেই তাদের দাবি।

মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদকে ‘বিতর্কিত সৌধ’ হিসেবে চিহ্নিত করার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে এলাহাবাদ হাই কোর্ট। বিচারপতি রাম মনোহর নারায়ণ মিশ্রের বেঞ্চ মুসলিম পক্ষের আপত্তিকে গুরুত্ব দিয়ে জানিয়ে দেয়, মসজিদটির বর্তমান মর্যাদায় কোনও পরিবর্তন আনা যাবে না। আদালতের এই পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট হয়েছে, ধর্মীয় স্থানের স্বীকৃতিকে ঘিরে কোনও বিতর্ক থাকলে, সেটি অবশ্যই প্রামাণ্য তথ্য ও সংবেদনশীলতা বিবেচনায় ভিত্তি করেই নির্ধারিত হবে।

আধ্যাত্মিক শহর মথুরায় রয়েছে বহু প্রাচীন মন্দির, যার মধ্যে অন্যতম শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান বলে বিবেচিত এলাকা। সেই ধর্মীয় স্থানেই রয়েছে শাহী ঈদগাহ মসজিদ। ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব প্রাচীন কেশবনাথ মন্দির ভেঙে শাহী ঈদগাহ নির্মাণ করেন। ১৯৩৫ সালে এলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশে ওই মন্দির চত্বরের মালিকানা হস্তান্তর হয় মথুরার রাজপরিবারের হাতে। পরবর্তীকালে, এই মালিকানা চলে যায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ঘনিষ্ঠ শ্রী কৃষ্ণভূমি ট্রাস্টের অধীনে। এরপর থেকেই ওই জমি নিয়ে দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। ১৯৬৮ সালে এক ঐতিহাসিক চুক্তির মাধ্যমে সমস্যার আপাত সমাধান হয়—চুক্তি অনুযায়ী, জমির মালিকানা হিন্দু পক্ষের হাতে থাকলেও শাহী ঈদগাহ মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার অধিকার দেওয়া হয় মুসলিম সম্প্রদায়কে।