TMCP Controversy Allegation : দিকে দিকে টিএমসিপির ‘কীর্তি’-র পর্দাফাঁস! হাওড়া থেকে বালুরঘাট একের পর এক ‘হাড়হিম’ অভিযোগ!

9

ডিজিটাল ডেস্ক, ৭ জুলাই : কসবা কাণ্ডে রাজ্য রাজনীতি যখন উত্তাল, ঠিক সেই সময় ফের শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র এক নেতার বিরুদ্ধে উঠল গুরুতর যৌন হেনস্থার অভিযোগ (TMCP Controversy Allegation)। অভিযুক্ত সৌভিক রায়, যিনি সংগঠনের রাজ্য সহ-সভাপতির পদে রয়েছেন। অভিযোগ, তিনি কলেজের ছাত্রদের জোর করে অশালীনভাবে পোশাক খোলাতে বাধ্য করতেন এবং সেই দৃশ্য র‍্যাগিংয়ের নামে ক্যামেরাবন্দি করে রাখতেন। এই ঘটনায় ছাত্র মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, হাওড়ার নরসিংহ কলেজে দীর্ঘদিন ধরে পড়ুয়াদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন টিএমসিপি নেতা সৌভিক রায়। তাদের দাবি, র‍্যাগিং-এর আড়ালে যৌন নিপীড়নের মতো গুরুতর ঘটনা ঘটত নিয়মিত। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২৩ সালেই হাওড়া জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতির কাছে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছিল।

অভিযোগকারীদের দাবি, একই চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছিল টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, ব্যাঁটরা থানার পুলিশ প্রশাসন এবং অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিশনের কাছেও। তা সত্ত্বেও, এখনও পর্যন্ত সৌভিক রায়ের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ উঠেছে।

প্রসঙ্গত, কসবা কাণ্ডে অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্রর বিরুদ্ধে একাধিক যৌন হেনস্থার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও, তিনি দলে নিজের অবস্থান বজায় রেখেছিলেন—এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়টি ঘিরে সম্প্রতি সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ ও প্রবীণ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তীব্র প্রশ্ন তোলেন, “যদি নেতারা এমন আচরণ করেন, তাহলে মহিলা কর্মীরা রাজনীতির ময়দানে কীভাবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগোবেন?”

পাশাপশি বালুরঘাট কলেজের এক ভাইরাল ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে বালুরঘাট কলেজের ইউনিয়ন রুমে টিএমসিপি সভাপতির মদ্যপানের একটি ২০২২ সালের ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে, যা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। ভিডিওটি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যেই এক মহিলার সঙ্গে বসে মদ্যপান করছেন টিএমসিপি সভাপতি। বিজেপির দাবি, “মদ, মহিলা ও নোংরা রাজনীতি—এই তিনেই তৃণমূলের আসল চেহারা ধরা পড়ে। কসবা থেকে সন্দেশখালি, টিএমসিপি ইউনিয়ন রুম থেকে পার্টি অফিস—সবই যেন মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের আঁতুড়ঘর। তৃণমূলে যোগ দিতে হলে হয় বিকৃতমনস্ক হতে হবে, নয়তো আক্রমণকারী।” এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি NKTV বাংলা।

কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে তৃণমূল কর্মী ও প্রাক্তন টিএমসিপি নেতা মনোজিত, যার কলেজে চাকরিপ্রাপ্তির পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শুধু একটিই নয়—জেলা থেকে শহরের একাধিক কলেজে বিতর্কিতভাবে নিয়োগের অভিযোগ সামনে এসেছে। রাজা প্যারীমোহন কলেজ, বারাসাত কলেজ, ভাঙড় ও সুন্দরবন মহাবিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে একই ধরনের বেনিয়মের ছবি ধরা পড়েছে। পাশাপাশি টিএমসিপি-র দাদাগিরির অভিযোগেও উদ্বিগ্ন শিক্ষাঙ্গন। এখন নজর, রাজ্য প্রশাসন ও শাসক দল এই অভিযোগগুলির বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেয়।