Tennis Player Murder : বাবার হাতে মেয়ে খুন! খুনের নেপথ্যে প্রতিবেশীদের কটাক্ষকে দায়ী করছেন বাবা

13

ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ জুলাই : হরিয়ানার টেনিস খেলোয়াড় রাধিকার হত্যার পেছনে কারণ নিয়ে শুরু থেকেই নানা জল্পনা চলছিল (Tennis Player Murder)। তবে ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর কিছুটা স্পষ্টতা এনেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দুপুরে রান্নাঘরে কাজ করছিলেন রাধিকা। সেই সময় পিছন থেকে দীপক পরপর পাঁচ রাউন্ড গুলি চালান। তার মধ্যে তিনটি গুলি রাধিকার শরীরে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

তদন্তে নেমেই পুলিশ অভিযুক্ত দীপককে গ্রেফতার করে এবং তাঁর কাছ থেকে দুটি বন্দুক বাজেয়াপ্ত করা হয়। প্রাথমিক জেরায় রাধিকাকে খুন করার কথা স্বীকার করেন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীপক দাবি করেন—তাঁর মেয়ে কথা শুনত না, সারাক্ষণ সমাজমাধ্যমে রিল বানিয়ে সময় কাটাত। বহুবার নিষেধ করা সত্ত্বেও রাধিকা না শুনলে, রাগের বশে তিনি গুলি চালান।

তবে পরে তদন্তে উঠে আসে খুনের পেছনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। পুলিশ জানিয়েছে, কয়েকদিন আগে খেলার সময় রাধিকার কাঁধে চোট লাগে। রাজ্যস্তরের এই টেনিস খেলোয়াড় সেই চোটের কারণে পারফরম্যান্সও খারাপ হচ্ছিল। এরপরই তিনি ঠিক করেন, শিশুদের জন্য একটি টেনিস অ্যাকাডেমি খুলবেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজের এলাকাতেই একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেন রাধিকা।

রাধিকার টেনিস অ্যাকাডেমি খোলার উদ্যোগ একেবারেই মেনে নিতে পারেননি দীপক। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তিনি চাইতেন রাধিকা অ্যাকাডেমি বন্ধ করে দিক, আর এই বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায়ই বচসা হত। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রাধিকার উপার্জনেই সংসার চলত। এই নিয়ে দীপককে মাঝেমধ্যেই প্রতিবেশী, আত্মীয় কিংবা বন্ধুদের কাছ থেকে নানা কথা শুনতে হত। সেই অপমান ও ক্ষোভ থেকেই দীপক চাইতেন মেয়েটি অ্যাকাডেমি না চালাক। তিনি বারবার রাধিকাকে সেটি বন্ধ করার কথা বললেও, তাঁর প্রস্তাবে রাজি হননি রাধিকা।

সূত্রের খবর, পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ানে দীপক বলেছেন, “আমি যখন দুধ কিনতে ওয়াজিরাবাদ গ্রামে যেতাম, তখন লোকেরা আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করত। বলত, আমি মেয়ের টাকায় চলছি। এসব কথা শুনে খুব অপমান বোধ করতাম। কেউ কেউ তো রাধিকাদের চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন তুলত। এই কারণেই আমি চাইতাম, রাধিকা টেনিস অ্যাকাডেমি বন্ধ করে দিক। কিন্তু সে রাজি হয়নি।” পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারও এই বিষয় নিয়ে বাবা-মেয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। দীপকের দাবি, তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং প্রচণ্ড চাপে ছিলেন। তাঁর কথায়, “আমি রাধিকাকে অ্যাকাডেমি বন্ধ করার কথা বলি। ও রাজি না হওয়ায় ঝগড়া শুরু হয়। রাগের মাথায় আমি আমার লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক দিয়ে গুলি চালাই।”

তবে এই বিষয়ে দীপকের স্ত্রী মঞ্জু যাদব লিখিত কোনো বিবৃতি দিতে অস্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি দীপকের ভাই কুলদীপ যাদব থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।