ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ জুলাই : স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে এক বৃদ্ধার চিকিৎসা করাতে গিয়ে চিকিৎসককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আরও জটিলতায় জড়ালেন উত্তরপাড়া কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক ও অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mallick FIR Update)।
সূত্রের খবর, ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে হাসপাতালের অধিকর্তা শুভাশিস কমল গুহ সরাসরি কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মাকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
সূত্রের খবর, অভিযোগ পাওয়ার পরেই হাসপাতালের পক্ষ থেকে চিঠিটি ডিসি সেন্ট্রালের কাছে পাঠানো হয়েছে। এরপর তিনি বউবাজার থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে যদি অভিযোগের যথাযথ প্রমাণ মেলে, তাহলে এফআইআর দায়ের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছিল গত বুধবার সকালে। তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ এবং ৮৬ বছর বয়সি শাশুড়ির মাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য যান স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে। জানা যায়, ওই বৃদ্ধা ত্বকের সমস্যায় ভুগছিলেন। যদিও সেদিন আউটডোর পরিষেবা বন্ধ ছিল, তা সত্ত্বেও এক চিকিৎসকের সুপারিশে তাঁকে মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।
পাশাপাশি, বিধায়কের আচরণ নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টরস ফ্রন্টও। সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে পাঠানো চিঠিতে কাঞ্চন মল্লিকের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় নিন্দা জানানো হয়েছে।
তবে অভিযোগ উঠেছে, সেদিন হাসপাতালের আউটডোরে বহু রোগী অপেক্ষায় থাকলেও, বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের পরিচয়ের কারণে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান মেহবুবার রহমান তাঁকে অগ্রাধিকার দিয়ে দেখেন। চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন, রোগীর অবস্থা গুরুতর নয়, তাই ছেড়ে দিতে চান। সেই সময় কাঞ্চন ও তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ একাধিক প্রশ্ন তোলেন এবং জোর দিয়ে দাবি করেন, বৃদ্ধার রক্তচাপ মাপতে হবে।
এতে চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁদের বচসা বাধে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। অভিযোগ, তখনই কাঞ্চন মল্লিক চিকিৎসককে বলেন, “আপনার রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিন, বাতিল করে দেব।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতাল চত্বরে। উপস্থিত রোগী এবং পরিজনদের অনেকেই বিধায়কের আচরণের প্রতিবাদ জানান। ঘটনার পর কাঞ্চন ও তাঁর স্ত্রী হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়ে যান।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত স্বাস্থ্য ভবনে জানায় এবং তা প্রশাসনিক উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে যায়। যদিও কাঞ্চন মল্লিক সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “আমি কোনও প্রভাব খাটাইনি। বরং আমি বিধায়ক বলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” উল্টো তিনি চিকিৎসকের বিরুদ্ধেই দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন।