Tennis Player Murder : হরিয়ানার রাধিকা-খুনে বাবার সাফাই মানছেন না পরিচিতেরা

11

ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ জুলাই : বৃহস্পতিবার সকালে নিজের বাড়িতেই কন্যা রাধিকার উপর গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে বাবা দীপক যাদবের বিরুদ্ধে (Tennis Player Murder)। অভিযোগ, পরপর পাঁচটি গুলি চালান তিনি। তার মধ্যে দু’টি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও, তিনটি গুলি রাধিকার পিঠে বিদ্ধ হয়ে ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে হরিয়ানার এই প্রতিভাবান টেনিস খেলোয়াড়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

কন্যা রাধিকাই উপার্জনের একমাত্র ভরসা— এই বিষয়টি নিয়ে পড়শি ও আত্মীয়দের কটাক্ষ দীপক যাদবের আত্মসম্মানে আঘাত করছিল, এমনটাই দাবি করেছেন তিনি। পুলিশের কাছে রাধিকাকে খুনের কারণ হিসেবে সেই ‘অসম্মান’কেই তুলে ধরেছেন দীপক।

তবে তাঁর এই দাবিতে বিশ্বাস করতে নারাজ আত্মীয়-পরিজন ও প্রতিবেশীরা। তাঁদের পাল্টা যুক্তি, দীপকের নিজের বিপুল সম্পত্তি রয়েছে, তাই মেয়ের উপার্জনে বসে খাওয়ার মতো পরিস্থিতিই তাঁর নয়। এখান থেকেই আরও গাঢ় হচ্ছে রহস্য— তাহলে কি রাধিকার হত্যার পেছনে অন্য কোনও কারণ লুকিয়ে আছে?

একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় জানিয়েছেন, দীপক যাদব কোনওভাবেই আর্থিক সংকটে ছিলেন না। তাঁর দাবি, দীপকের গুরুগ্রামে রয়েছে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি, যেখান থেকে প্রতি মাসে অন্তত ১৫-১৭ লক্ষ টাকার আয় হয়। পাশাপাশি, তাঁর মালিকানায় রয়েছে একটি বিলাসবহুল খামারবাড়িও। গ্রামের প্রায় সকলেই জানেন, যাদব পরিবার অত্যন্ত বিত্তশালী। এই পরিস্থিতিতে ওই আত্মীয় সরাসরি প্রশ্ন তোলেন— “যে মানুষটির নিজস্ব এত বিপুল সম্পদ এবং মাসিক মোটা আয় রয়েছে, তাঁর তো মেয়ের উপার্জনের ওপর নির্ভর করার কোনও প্রয়োজনই পড়ে না। তাহলে কীভাবে বিশ্বাস করা যায়, ‘মেয়ের উপার্জনে খেতে হচ্ছে’— এই কটাক্ষের জন্য মেয়েকে খুন করতে পারেন তিনি?” তাঁর মতে, দীপক যদি এই যুক্তিকেই খুনের কারণ হিসেবে তুলে ধরেন, তবে তা অত্যন্ত দুর্বল এবং বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। ফলে নতুন করে উঠছে আরও গভীর প্রশ্ন— আসলেই কি কেবল সম্মানের কারণে রাধিকা খুন হলেন? নাকি এর আড়ালে রয়েছে সম্পত্তি, সম্পর্ক বা অন্য কোনও গোপন দ্বন্দ্ব?

আর এক আত্মীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রশ্ন তোলেন, “যে ব্যক্তি বিপুল সম্পত্তির মালিক, যার আর্থিক স্বচ্ছলতার কথা গোটা গ্রাম জানে, তাঁকে ‘মেয়ের উপার্জনে খাচ্ছ’—এই বলে কটাক্ষ করার যুক্তিই বা আসে কোথা থেকে?” তাঁর মতে, দীপকের আর্থিক অবস্থা নিয়ে কারও সন্দেহ থাকার কথা নয়, তাই এই ধরনের কটাক্ষের প্রশ্নই ওঠে না। ওই আত্মীয় আরও জানান, দীপক বরাবরই মিশুকে, শান্ত স্বভাবের এবং মৃদুভাষী মানুষ। রাধিকাকে তিনি কতটা ভালবাসতেন, তার প্রমাণ বহুবার মিলেছে। রাধিকার টেনিস কেরিয়ারের জন্য নিজেই নিজের উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা ছেড়ে দেন দীপক। এমনকি, একবার দু’লক্ষ টাকা দিয়ে মেয়ের জন্য একটি বিশেষ র‌্যাকেট কিনে এনে দেন।

প্রতিবেশীরাও বলছেন, রাধিকা ছিলেন দীপকের নয়নের মণি। এমন একজন পিতা, যিনি মেয়ের স্বপ্নপূরণের জন্য নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দিতে পারেন, তিনি শুধুমাত্র কিছু কথার খোঁচায় কন্যাকে খুন করে ফেলবেন—এই ব্যাখ্যা মানতে রাজি নন কেউই।