ডিজিটাল ডেস্ক ১৪ই জুলাইঃ বন্ধের নামে খেজুরিতে ‘দাদাগিরি’ বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। গায়ের জোরে জনজীবন ব্যাহত করার চেষ্টা করে গেরুয়া শিবির। তাতে বাধা দেয় পুলিশ। উর্দিধারীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে বন্ধ সমর্থনকারীরা। একপ্রস্থ ধস্তাধস্তিও হয়(Khejuri Banadhe)।
খেজুরি বিদ্যাপীঠের কাছে ফলের পেটি রেখে হেঁড়িয়া-খেজুরি রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন বন্ধ সমর্থনকারীরা। স্বাভাবিকভাবে তার ফলে যাতায়াতকারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের রাজ্য সড়কের উপর থেকে হঠাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাঁধে। এদিকে, সোমবার সকালেই বাঁশগোড়াতে গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। এখনও পর্যন্ত পুলিশ ৯ জন বন্ধ সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, মেলায় অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে ২ জনের মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে। মৃতদের নাম সুজিৎ দাস(২৩) এবং সুধীর পাইক(৬৫)। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওই ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও বিজেপির অভিযোগ, ওই ২ জনকে খুন করা হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় খেজুরি থানার পুলিশ। প্রাথমিক অনুমান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দেরও একই দাবি। তাঁরা জানান, অনুষ্ঠানস্থলের কাছে একটি হ্যালোজেন লাইট খুলে পড়ে দুই ব্যক্তির উপর। তার জেরে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের।
এর জেরে আগেই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সোমবারে খেজুরি বনধের ডাক দিয়েছিলেন। তবে শুভেন্দুর দাবি,ওই ব্যক্তিদের পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে। বিজেপির দাবি,মৃতদেহগুলিতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সঙ্গে স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা পবিত্র দাসের অভিযোগ, “বলা হচ্ছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে। তাহলে মৃতের কপালে রক্ত এল কোথা থেকে? মুখে রক্ত এল কীভাবে? প্যান্ট-জামা ছিঁড়ল কীভাবে? পরিকল্পিতভাবে ২ জনকে খুন করা হয়েছে।”
এদিকে, এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওটি বিজেপি খুনের তত্ত্বে জল ঢেলে দিয়েছে আগেই। যা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে জেলাজুড়ে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি জালাউদ্দিন খান বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী বরাবর লাশের রাজনীতি করতে ভালোবাসেন। শকুনের মতো চেয়ে থাকেন কখন লাশ পড়বে আর তিনি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শুরু করবেন। এবারেও তার অন্যথা হয়নি। রাতে অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে দুই ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। নিছক একটা দুর্ঘটনাকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে রাজনীতি করতে শুরু করেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু অনুষ্ঠান মঞ্চের যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাতে সত্য ঘটনা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এরপরেও বিজেপির লজ্জা করে না?” কাঁথির এসডিপিও দিবাকর দাস বলেন, “অভিযোগের তদন্ত চলছে। অনুষ্ঠানের কোনও অনুমোদন ছিল না। কার গাফিলতিতে মৃত্যু ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”