Odisha Student Death : ওড়িশায় অধ্যাপকের যৌন হেনস্তায় গায়ে আগুন! মর্মান্তিক পরিণতি ছাত্রীর!

12

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৫ জুলাই : ওড়িশার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগে বিচার চেয়ে নিজেকে আগুনে ঝলসে দিয়েছিলেন এক ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছিল ক্যাম্পাসের মধ্যেই, ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, কিন্তু চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও সোমবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ওড়িশা সরকার। অভিযুক্ত অধ্যাপককে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে (Odisha Student Death)।

কয়েক দিন আগে, ওড়িশার একটি কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী কলেজের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনেন। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষ অন্তর্বর্তী তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিল, অভিযোগ রয়েছে, তারা কার্যত কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এই পরিস্থিতিতে শনিবার বিকেলে ওই ছাত্রী কলেজের অপর এক অধ্যাপকের সঙ্গে দেখা করে দ্রুত বিচার চেয়ে আবেদন করেন। এরপরই, অত্যন্ত মর্মান্তিকভাবে, কলেজ ক্যাম্পাসে নিজ শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। তাঁর এক সহপাঠী তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেও তৎপরতা সফল হয়নি। এই ঘটনা ঘিরে গোটা ক্যাম্পাসে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দু’জনকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, তরুণীর শরীরের প্রায় ৯৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠে। এরপর তাঁকে বালাসোর জেলা হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এইমস-এ রেফার করা হয়।

ঘটনাটির প্রভাব রাজ্য রাজনীতিতেও প্রবলভাবে অনুভূত হয়। রবিবার, কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আক্রমণ শানায় তৃণমূল কংগ্রেস। দলটির এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়, “ভিন্ন দিন, ভিন্ন শিকার। বিজেপি সরকারের তত্ত্বাবধানে সর্বত্রই পচন ছড়িয়ে পড়েছে।” তৃণমূলের তরফে আরও অভিযোগ তোলা হয়, “এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝির নীরবতা অত্যন্ত লজ্জাজনক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। আবারও প্রমাণিত হল ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ স্রেফ এক প্রহসন।” সামাজিক এবং রাজনৈতিক চাপের মুখে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাটি নিয়ে মুখ খুলে ছাত্রীর উন্নত চিকিৎসার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এরপরই অভিযুক্ত অধ্যাপককে গ্রেফতার করা হয়।

গত সোমবার ওড়িশা সফরে এসে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু হাসপাতালে গিয়ে যৌন হেনস্তার শিকার ওই ছাত্রীকে দেখতে যান। ভুবনেশ্বরের এইমস-এর বার্ন ইউনিটে গিয়ে ২০ বছর বয়সি তরুণীর শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন তিনি এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথাও বলেন। তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সমস্ত চিকিৎসা প্রয়াস ব্যর্থ হয়ে সোমবার রাতেই মৃত্যু হয় ওই নির্যাতিতার।