ডিজিটাল ডেস্ক ১৮ই জুলাইঃ স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ নিয়ে আবারও সুপ্রিম কোর্টে মামলা। SSC-এর ২০২৫ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। শীর্ষ আদালতে আগামী সপ্তাহে মামলার শুনানির সম্ভাবনা। তাঁরা এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট নির্দেশের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP)। আগামী সপ্তাহেই মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানা গিয়েছে (SSC Supreme Court Update)।
প্রসঙ্গত, ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পরে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ৩০ মে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এসএসসি। অনলাইন আবেদন শুরু হয় ১৬ জুন বিকেল ৫টা থেকে এবং প্রাথমিকভাবে আবেদনের শেষ দিন নির্ধারিত ছিল ১৪ জুলাই। পরবর্তীতে এই সময়সীমা বাড়িয়ে করা হয় ২১ জুলাই পর্যন্ত।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের পুরো এসএসসি প্যানেলই বাতিল হয়ে যায়। বাতিল হয়ে যায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরি। তার পরেই শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মতোই নতুন করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। নয়া বিজ্ঞপ্তিতে নম্বর বিভাজন-সহ বেশ কিছু নিয়ম বদল করা হয়। সেই বিষয়গুলি নিয়েই আপত্তি তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের আপত্তি ছিল, কেন পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া হবে? কেনই বা বয়সের অতিরিক্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। আগের বারে ৪৫ নম্বর পেলে পাশের নিয়ম বদলে এ বার ৫০ নম্বর করা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় মামলায়। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ২০১৬ সালের বিধি মেনে নিয়োগ না করে ২০২৫ সালে নতুন বিধি তৈরি করা হয়েছে।
হাইকোর্টের বক্তব্য ছিল—
হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এই মামলাগুলি খারিজ করে দেয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী,’কমিশন ও পর্ষদ এই অচলাবস্থার জন্য দায়ী হলেও, দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করাটাই এখন অগ্রাধিকার। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করলে সমস্যা আরও বাড়বে।’
আদালত আরও জানায়, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, শুধুমাত্র ‘আনটেন্টেড’ (অযোগ্য বা দাগি নন) এবং প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের বয়সে ছাড় দেওয়ার বিষয়টি প্রযোজ্য। অন্য কাউকে এই ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়নি। মামলাকারীরা এই দুটি ক্যাটেগরিতে পড়েন না।
তবে কমিশন নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত নতুন নিয়ম তৈরি করতে পারে, এবং ভবিষ্যতে শূন্যপদ বাড়ানোতেও কোনও বাধা নেই বলেই জানিয়েছিল হাই কোর্ট।
ডিভিশন বেঞ্চের সেই রায় অনুযায়ী, ১০ নম্বর অতিরিক্ত নম্বর ও বয়সে ছাড় সংক্রান্ত বিধিগুলিও সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত হিসেবে বৈধতা পায়।
এই রায় মেনে নিতে পারেননি বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাই তাঁরা কলকাতা হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। তাঁদের বক্তব্য, নতুন নিয়মে পুরনো প্রার্থীদের প্রতি অবিচার হচ্ছে এবং এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয়।
এখন নজর শীর্ষ আদালতের দিকে। শোনা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহেই এই মামলার শুনানি হতে পারে।