ডিজিটাল ডেস্ক, ১৯ জুলাই : যৌন হেনস্তার বিচারের দাবিতে গায়ে আগুন দিয়ে ছাত্রীর মৃত্যুকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্যের মধ্যেই ফের নৃশংস ঘটনা ওড়িশায়। এবার পুরির রাস্তায় এক ১৫ বছরের কিশোরীর গায়ে আগুন লাগিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে ভুবনেশ্বরের এইমস হাসপাতালে। এই ঘটনার জেরে বিজেপি শাসিত ওড়িশার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। এক্স-এ তৃণমূল কংগ্রেস কটাক্ষ করে লিখেছে, “কোথায় গেল ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ স্লোগান?”—নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে সরব হয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মানবাধিকার কর্মীরাও (Odisha Girl Fire)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে ভয়াবহ এই ঘটনা ঘটে ওড়িশার পুরী জেলার বায়াবার গ্রামে। জানা যায়, ওই কিশোরী তার এক বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার পথে তিন দুষ্কৃতী তাকে ঘিরে ধরে। অভিযোগ, তারা কিশোরীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং তারপর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। কিশোরীর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই আগুন নিভিয়ে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে ওই কিশোরী ভুবনেশ্বরের এইমস-এ চিকিৎসাধীন।
নির্মম দুটি ঘটনায় স্তম্ভিত ওড়িশা। প্রথম ঘটনাটি ঘটে পুরী জেলার বালঙ্গা অঞ্চলে, যেখানে মাত্র ১৫ বছরের এক কিশোরীকে রাস্তায় পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। বিষয়টি জানার পর ওড়িশার উপমুখ্যমন্ত্রী ও নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী প্রভাতি পারিদা এক্স–এ ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এই ঘটনায় তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। কিশোরীকে দ্রুত ভুবনেশ্বরের এইমস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে এবং তার চিকিৎসার সমস্ত খরচ সরকার বহন করবে। পুলিশকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহ আগেই, বালেশ্বরের ফকির মোহন (স্বায়ত্তশাসিত) কলেজে ঘটেছিল আরেক মর্মান্তিক ঘটনা। ২০ বছরের এক ছাত্রী কলেজ ক্যাম্পাসে নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অভিযোগ ছিল, কলেজের এক সহকারী অধ্যাপক তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ জানিয়েও কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় হতাশ হয়ে তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন। ১৪ জুলাই রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। ওই ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অভিযুক্ত অধ্যাপককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং ইউজিসির একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং টিম তদন্ত শুরু করেছে।