ডিজিটাল ডেস্ক, ২৮ জুলাই : ভিন্ রাজ্যে বাঙালিদের উপর হেনস্থা, অনুপ্রবেশ ইস্যু ও ভুয়ো ভোটার তালিকা–সহ একাধিক বিষয় নিয়ে সোমবার সংসদে উত্তেজনা ছড়াতে পারে। তার ইঙ্গিত আগেই মিলেছে তৃণমূলের তরফে। এদিন দিল্লি রওনা হওয়ার আগে সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভুয়ো ভোটার তালিকা ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তার জন্য সরাসরি বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি (Abhishek On Bihar Voter List)।
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর লাগাতার নির্যাতন, বাংলাদেশি সন্দেহে পুশব্যাকের চেষ্টা-সহ একাধিক গুরুতর অভিযোগে এবার কার্যত ‘অল আউট অ্যাটাক’ নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে ‘ভাষা আন্দোলন’, সেই প্রতিবাদ এবার ছড়িয়ে পড়বে জাতীয় স্তরেও। সংসদেও বাঙালির সম্মান ও অধিকার রক্ষায় কড়া বার্তা দিতে প্রস্তুত রাজ্যের শাসকদল।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘অপারেশন সিঁদুর’ প্রসঙ্গ তুলেই লোকসভায় তিনি বাংলায় বক্তব্য রাখবেন। একই বিষয়ে বাংলাতেই কথা বলবেন যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষ, এমনটাও জানিয়েছেন অভিষেক। দলীয় কৌশল অনুযায়ী, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাঙালিদের হেনস্থা ও অবমাননার প্রতিবাদ সংসদীয় মঞ্চেও জোরালোভাবে তুলে ধরতে চায় তৃণমূল।
সোমবার দিল্লির উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের হেনস্থার বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিজেপি হিংসার রাজনীতি করছে। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান, ছত্তিশগড়— এই সব রাজ্যে পরিকল্পিতভাবে বাঙালিদের উপর নির্যাতন ও অপমানের একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে। এসআইআর-এর নামে বাঙালিদের হয়রানি করা হচ্ছে।” ভুয়ো ভোটার তালিকা নিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, “মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে এখন কুকুরের নামেও ভোটার কার্ড বানানো হচ্ছে! বাবার নাম লেখা হচ্ছে ‘কুত্তাবাবু’! এই ধরনের ভুয়ো তথ্যই নাকি নির্বাচন কমিশন এসআইআর-এর জন্য গ্রহণ করছে।” তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে এই ভুয়ো কার্ড তৈরির মাধ্যমে নির্বাচনের সময় ভোট লুঠ করে বিজেপিকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।”
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র অভিযোগ তুললেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কমিশন এখন তাদের তল্পিবাহক হয়ে কাজ করছে।” সরাসরি কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “কমিশন কার্যত বিজেপির দাসত্ব করছে।” পরপর একাধিক প্রসঙ্গ তুলে তিনি কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। বলেন, “নির্বাচনের সময় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব যখন নির্বাচন কমিশনের হাতে, তখন কোচবিহারের শীতলকুচিতে এক প্রবীণ, নির্দোষ ভোটারকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় এক দফার বদলে আট দফায় ভোট করানো হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমিশনের বিজেপি-ঘেঁষা আচরণ আরও প্রকট হয়েছে।”