ডিজিটাল ডেস্ক ১লা অগাস্টঃ SIR-এর পর বিহারের খসড়া তালিকা প্রকাশ। ইতিমধ্যেই তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির হাতে। ৬৫ লক্ষ নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা। যোগ্য কারও নাম বাদ গেলে সেই ব্যক্তি অভিযোগ জানাতে পারবেন। অভিযোগ জানাতে পারবে রাজনৈতিক দলগুলিও। কারও নাম বাদ দিতেও কমিশনকে জানানো যাবে। ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নাম অন্তর্ভূক্ত বা বাদ দেওয়া যাবে। করা যাবে নামের সংশোধনও,জানিয়েছে কমিশন। ১ অগস্ট খসড়া তালিকা প্রকাশের কথা কমিশন আগেই জানিয়েছিল। সেই মতো শুক্রবার বিহারের ৩৮টি জেলার ২৪৩টি বিধানসভায় রাজনৈতিক দলগুলির হাতে তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, রাজ্যের ৯০,৮১৭টি বুথের পরিসংখ্যান রয়েছে ওই তালিকায়। সেই আঁচে সংসদে আজও SIR বিতর্ক । বাইরে বিক্ষোভে সামিল ইন্ডিয়া ব্লকের দলগুলি। সামিল ইন্ডিয়া ব্লকের অন্যতম শরিক তৃণমূল। আলোচনার দাবিতে সরব বিরোধীরা । সংসদের দুই কক্ষেই আলোচনা চেয়ে চিঠি । আলোচনায় চেয়ে চিঠি বিরোধীদের । ইতিমধ্যেই কমিশন ঘেরাওয়ের ডাক বিরোধীদের। ২১ জুলাই কমিশন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন মমতা । মমতার ডাকেই সাড়া বিরোধীদের । বিরোধী দলগুলি একত্রে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা বিহারের ভোটার তালিকার সংশোধন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। ভোটের মাত্র কয়েক মাস আগে এটা করা হচ্ছে। এটা অভূতপূর্ব(Parliament On Bihar Issue)।
বিহারে চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন শুরু হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, খসড়া তালিকা প্রকাশ সেই প্রক্রিয়ারই অংশ। এই তালিকা প্রকাশের পর তা নিয়ে কোনও আপত্তি আছে কি না, এক মাসের মধ্যে তা কমিশনকে জানাতে হবে। কারও নাম বাদ দিতে হলে বা কারও নাম তালিকায় জুড়তে হলে সেই সংক্রান্ত আবেদন ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি যে কোনও ভোটার অভিযোগ জানাতে পারবেন। বিহারের এই এসআইআর নিয়ে একাধিক মামলা হয়েছে। অভিযোগ, ভোটারদের কাছ থেকে ভোটাধিকার যাচাইয়ের জন্য যে নথি চাওয়া হয়েছে, সেই তালিকায় আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ডের মতো সহজলভ্য নথি রাখা হয়নি। আদালতে তা নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিরোধীরা। সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন।
কমিশন ইঙ্গিত দিয়েছে, অনুরূপ সংশোধন সারা দেশে করা হবে। এই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, সময় এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে আশঙ্কার প্রেক্ষিতে আমরা সংসদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’’ বিরোধীদের বক্তব্য, ভোটার তালিকার এই সংশোধনের ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভোটাধিকার হারাবেন। এতে নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। দেরি না-করে তাই এ নিয়ে আলোচনার দাবি জানানো হয়েছে স্পিকারের কাছে। বিরোধীদের এই চিঠিতে সই করেছে কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি (শরদ পওয়ার), শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে), আরজেডি, আরএসপি প্রমুখ। কংগ্রেসের তরফে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, উপদলনেতা গৌরব গগৈ, তৃণমূলের তরফে কাকলি ঘোষ দস্তিদার, এনসিপির তরফে সুপ্রিয়া সুলেরা চিঠিতে সই করেছেন। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘‘ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন এবং এসআইআর-কে দুমুখো অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে বিজেপি। পরিচয়ভিত্তিক যাচাই করা এবং তার পর এনআরসি করার উদ্দেশ্য আগেই ফাঁস হয়েছে। আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, এটা নীরব এবং অদৃশ্য় একটা কারচুপি। এটা ছাড়া বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’’
পাশাপাশি বিজেপির জন্য ভোট চুরিতে যুক্ত নির্বাচন কমিশন, বিস্ফোরক দাবি লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর। কমিশনে যারা এই কাজে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হুঁশিয়ারি রাহুলের। কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত অফিসাররাও ছাড় পাবেন না সরব রাহুল। লোকসভার বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারি, “আপনারা ভারতের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। এটা সরাসরি দেশদ্রোহ। আপনারা অবসরপ্রাপ্ত হলেও, আমরা আপনাদের খুঁজে বার করব।” তিনি আরও বলেন, বিহারে যে হারে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে, তা গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আঘাত।