ডিজিটাল ডেস্ক, ৩ অগাস্ট : রিজেন্ট পার্কে এক বৃদ্ধের রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায় (Regent Park NRC Suicide)। শনিবার তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় নিজের ঘর থেকেই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে। পরিবার সূত্রে দাবি, সম্প্রতি এনআরসি (নাগরিকত্ব সংশোধন প্রক্রিয়া) নিয়ে ভয় ও উদ্বেগে ভুগছিলেন বৃদ্ধ। আশঙ্কা করছিলেন, এনআরসি চালু হলে তাঁকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। সেই আতঙ্ক থেকেই হয়তো তিনি চরম সিদ্ধান্ত নেন বলে অনুমান পরিবারের। ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে— এটি নিছক আত্মহত্যা, না কি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ।
মৃত বৃদ্ধের নাম দিলীপ সাহা। জানা গিয়েছে, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে কলকাতায় চলে আসেন তিনি। রিজেন্ট পার্ক এলাকার আনন্দপল্লি পশ্চিমে পরিবার নিয়ে থাকতেন। পেশায় ছিলেন ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি স্কুলের অশিক্ষক কর্মী। রবিবার সকালে স্ত্রী বারবার ডাকলেও দিলীপবাবু কোনও সাড়া দেননি। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে তিনি পাশের বাড়িতে গিয়ে ভাগ্নেবউ পিঙ্কি সাহাকে ডাকেন। পিঙ্কির পরামর্শেই দরজা ভাঙা হয়। এরপরই ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় দিলীপবাবুর ঝুলন্ত দেহ। ঘটনার খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।
নিশ্চিত নয় কেন ঘটল এই মৃত্যু। তবে মৃতের পরিবার জানাচ্ছেন, দিলীপবাবু গত কয়েক মাস ধরে এনআরসি নিয়ে গভীর আতঙ্কে ভুগছিলেন। তাঁর মনে হত, এনআরসি চালু হলে তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। এই ভয় এতটাই গ্রাস করেছিল যে, গত সাত দিন ধরে তিনি ঘর থেকে বের হননি। সারাদিন ঘরে বসে টিভি দেখতেন, কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। এরপর হঠাৎই তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের দাবি, এই আতঙ্কই তাঁকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে। যদিও পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে—আত্মহত্যার পেছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা তদন্তাধীন।