ডিজিটাল ডেস্ক, ৬ অগাস্ট : ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর শুল্কযুদ্ধ ও উত্তেজনার আবহে প্রথমবার চিন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Modi China Tour)। সেখানে তিনি অংশ নেবেন সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-র শীর্ষ সম্মেলনে। এই সম্মেলন আগামী ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিনের তিয়ানজিন শহরে অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে ২০১৯ সালে শেষবার চিন সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এবারের সফর তাই কূটনৈতিক দিক থেকে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এসসিও সদস্য দেশগুলির সঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ রোধ এবং বাণিজ্য সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাশাপাশি, এই সফরের মাধ্যমে ভারত-চিন সম্পর্কের স্থিতিশীলতা ফেরানোর দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মোদির পৃথক বৈঠকের সম্ভাবনাও রয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে মোদি ও জিনপিংয়ের মধ্যে শেষবার সাক্ষাৎ হয়েছিল।
শুল্ক ইস্যুতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই নয়াদিল্লির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর ঘোষণা করেছেন তিনি। পাশাপাশি, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখার কারণে শুল্ক আরও বাড়ানোর হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প। উল্লেখ্য, রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা দেশগুলির তালিকায় ভারতের পাশাপাশি রয়েছে চিনও। এই ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিন সফর তাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কূটনৈতিকভাবে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক-হুঁশিয়ারির প্রেক্ষাপটে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করতে উদ্যোগী হয়েছে চিন। দুই দেশের শক্তির তুলনায় বেজিং এক অভিনব উপমা টেনেছে— ‘হাতি’ এবং ‘ড্রাগন’-এর। চিনের মন্তব্য, “ড্রাগন ও হাতির মধ্যে সহযোগিতা দু’দেশের স্বার্থেই জরুরি। ড্রাগন ও হাতিকে একসঙ্গে নাচাতে হবে। পরস্পরের বিরুদ্ধে নয়, একে অপরকে সহায়তা করলেই উভয়ের লাভ। এশিয়ার এই দুই বৃহৎ অর্থনীতি যদি একজোট হয়, তাহলে তা গোটা বিশ্বের পক্ষেই সুফল বয়ে আনবে।”
এই বার্তার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিন সফর এবং রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাঁর সম্ভাব্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে কৌতূহল আরও বেড়েছে কূটনৈতিক মহলে।
পাশাপাশি এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ উপস্থিত থাকবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড ও ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রেক্ষিতে এবারের বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কী বার্তা দেন, সেদিকে বিশেষ নজর থাকবে কূটনৈতিক মহলের।