Election commission-Rahul Gandhi: মুখোমুখি নির্বাচন কমিশন এবং রাহুল গান্ধী,হলফনামা দিন অথবা ক্ষমা চান
ডিজিটাল ডেস্ক ১০ই অগাস্টঃ ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরাসরি ভোট চুরির অভিযোগ তুলেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক ‘প্রমাণ’ দেখিয়ে ওই অভিযোগ করেন রাহুল। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা রাহুলের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল ভারতের নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার রাহুলের ‘বিস্ফোরক’ দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের দাবি, রাহুল গান্ধী যেন সই করে তাঁর অভিযোগ সংক্রান্ত বিবৃতি জমা দেন। আর যদি তিনি তা না করেন, তাহলে দেশের কাছে রাহুলকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই সংঘাত ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে(Election commission-Rahul Gandhi)।
রাহুল গান্ধী এর আগে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও কর্ণাটকে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোট চুরির গুরুতর অভিযোগ করেছিলেন। সূত্রের খবর, শনিবার কমিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, অভিযোগ সত্য হলে তাঁর উচিত হলফনামা জমা দেওয়া। আর যদি তা না করেন, তাহলে দেশের জনসাধারণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। কমিশন এর আগেও তাঁকে একই নির্দেশ দিয়েছিল। সূত্রের খবর, রাহুলকে মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের জারি করা ইস্তেহারে স্বাক্ষর করার কথাও বলা হয়েছে। না করলে তাঁকে ‘অযৌক্তিক অভিযোগের’ জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। কমিশনের বক্তব্য, অভিযোগে বিশ্বাস থাকলে ইস্তেহারে স্বাক্ষরে আপত্তি থাকার কথা নয়।
তবে রাহুল গান্ধী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোনও ইস্তেহারে স্বাক্ষর করবেন না। তাঁর বক্তব্য, সাংসদ হিসেবে তিনি ইতিমধ্যেই সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তিনি সরকারের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা কারসাজি ও ভোট চুরির অভিযোগে সরব হন।
এদিকে, বিজেপি কড়া সুরে পাল্টা আক্রমণ করেছে। দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া শনিবার বলেন, যদি রাহুল গান্ধীর নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা না থাকে, তবে নৈতিক কারণে তাঁর লোকসভা সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরাকেও যথাক্রমে রাজ্যসভা ও লোকসভা থেকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান তিনি।
রাহুল গান্ধীর অভিযোগ—-
লোকসভা নির্বাচনে কর্নাটকে ভোট চুরির উদাহরণ দিতে গিয়ে রাহুল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মহাদেবপুরা বিধানসভায় ভয়ঙ্কর চুরি হয়েছে। সেখানে এক লক্ষেরও বেশি ভোট চুরি হয়েছে।’’ তিনি জানান,বেঙ্গালুরুর ওই লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস পেয়েছিল ৬ লক্ষ ২৬ হাজার ভোট। বিজেপি পেয়েছিল ৬ লক্ষ ৫৮ হাজার ভোট। হারজিতের ব্যবধান ছিল ৩২ হাজারের সামান্য বেশি। আর শুধু মহাদেবপুরা বিধানসভা আসনে দুই দলের তফাত ছিল ১ লক্ষ ১৪ হাজারের বেশি ভোট। বিধানসভায় মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা এমনকি, লোকসভা ভোটের আগে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোটেও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন।
সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে ওই এলাকায় ১০ ফুট বাই ১৫ ফুটের একচিলতে একটি ঘরে ৮০ জন ভোটারের নাম নথিভুক্তির তথ্যপ্রমাণ মিলেছে ।
মহাদেবপুরা বিধানসভায় রাহুলের দেওয়া ঠিকানায় খুঁজতে গিয়ে ৪৭০ নম্বর বুথের আউটার রিং রোডের একটি বাড়ির দেড়শো বর্গফুটের ঘর থেকে ৮০ জন ভোটারের ‘সন্ধান’ মেলায় তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ৩৫ নম্বর মুনি রেড্ডি গার্ডেনের ওই বাড়ির ঠিকানায় নিবন্ধিত ভোটারদের কেউই সেখানে থাকেন না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এমনকি,ওই বাড়ির মালিক দীপঙ্করও সেখানকার নিবাসী নন! তাঁর বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বলে সরকারি তথ্যে জানা গিয়েছে। মহাদেবপুরা-সহ কর্নাটক জুড়ে ভোটার তালিকায় কারচুপির সমীক্ষা করতে ইতিমধ্যেই সে রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের কাছে বার্তাও পাঠিয়েছেন রাহুল। নির্বাচন কমিশন ডিজিটাল ভোটার তালিকা না দেওয়ায় ভোটার তালিকায় কারচুপির আশঙ্কা বাড়ে বলেও অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা।