ডিজিটাল ডেস্ক, ১০ অগাস্ট : বৈধ দাম্পত্য জীবনে জন্ম নেওয়া সন্তানকে স্বামীর সন্তান বলেই গণ্য করবে আইন— এমনই স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court On Father’s Right)। আদালতের পর্যবেক্ষণ, যদি স্বামী প্রমাণ না করতে পারেন যে গর্ভধারণের সময় তিনি স্ত্রীর কাছে ছিলেন না, তাহলে এমনকি পরকীয়ার অভিযোগ থাকলেও, সন্তানের পিতৃত্ব নিয়ে আইনি ধারণা বদলাবে না।
শীর্ষ আদালত আরও জানিয়েছে, ডিএনএ পরীক্ষা করার দাবি কোনও পক্ষের স্বয়ংক্রিয় অধিকার নয় এবং একে রুটিন বা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা যাবে না। সন্তানের সর্বোচ্চ স্বার্থ, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং সামাজিক মর্যাদাকে জৈবিক সত্যের উপরে স্থান দিতে হবে। এই রায় ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে। সমালোচকদের বক্তব্য, এতে পুরুষদের উপর অতিরিক্ত এবং অন্যায্য দায় চাপানো হচ্ছে— এমন সন্তানের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যারা হয়তো জৈবিকভাবে তাদের নিজের নয়।
অনেকের মতে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় বিবাহের পবিত্রতাকে ব্যক্তিগত অধিকার ও সত্যের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছে— বিশেষ করে সেই সব স্বামীর ক্ষেত্রে, যারা স্ত্রীর বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছেন। সমালোচকদের বক্তব্য, পরকীয়াকে অপরাধের তালিকা থেকে সরানোর পর এই রায় বৈবাহিক দায়িত্ববোধকে আরও দুর্বল করেছে এবং একপ্রকার বিশ্বাসঘাতকতাকেই আইনি সুরক্ষা দিচ্ছে।
তবে অন্য এক শ্রেণির মতে, এই রায়ের মূল লক্ষ্য সন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা এবং পারিবারিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। তাঁদের দাবি, একজন শিশুকে সামাজিক কলঙ্ক ও পরিচয় সংকটের হাত থেকে বাঁচাতে এমন পদক্ষেপ জরুরি। তবে, আরও অনেকের মত, এই ধরণের আইনি প্রবণতা ধীরে ধীরে ভারতীয় পারিবারিক মূল্যবোধকে ক্ষয় করছে— যেখানে বিশ্বাস, আস্থা ও পারস্পরিক কর্তব্যের জায়গা নিচ্ছে ‘আইনগত কল্পনা’। এর ফলে সত্যের তুলনায় সামাজিক ভাবমূর্তিকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।