Durga Angan At West Bengal : এবার রাজ্যে দুর্গা অঙ্গন! মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা! সিদ্ধান্ত হয়ে গেল রাজ্য মন্ত্রিসভাতেও

68

ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ অগাস্ট : দিঘার জগন্নাথ ধামের পরে এবার তৈরি হচ্ছে ‘দুর্গা অঙ্গন’ (Durga Angan At West Bengal)। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর বাংলায় আরেকটি নতুন ‘দর্শনীয় স্থান’ তথা ‘সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ গড়ে তোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রকল্পের নির্মাণে সরকারি সম্মতি প্রদান করা হয়েছে।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘দুর্গা অঙ্গন’ প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে রাজ্যের পর্যটন দফতর এবং হিডকো। মন্দির নির্মাণের জন্য গঠন করা হবে একটি ট্রাস্ট— এমনটাই জানিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তবে মন্দির কোথায় তৈরি হবে এবং তার জন্য কত বাজেট ধার্য করা হবে, সে বিষয়ে খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার।

নবান্নে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও ফিরহাদ হাকিম প্রকল্পটি নিয়ে বিস্তারিত জানান। অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ইউনেস্কো যখন বাংলার দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দেয়, তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সম্মানকে আরও দৃঢ় করতে ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরির ঘোষণা করেন। আজ মন্ত্রিসভায় সেই প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। একটি ট্রাস্ট গঠন করা হবে, যার সদস্যদের নাম পরে জানানো হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দিঘার জগন্নাথ ধামের মতো, বাংলায়ও তৈরি হবে একটি নতুন দর্শনীয় স্থান— ‘দুর্গা অঙ্গন।’’

তবে ‘দুর্গা অঙ্গন’ ঠিক কোথায় তৈরি হবে, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তাঁর কথায়, আগে স্থান নির্ধারণ করা হবে, তারপর বাজেট এবং অন্যান্য বিস্তারিত ঘোষণা করা হবে। আপাতত কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে এই বিষয়ে স্পষ্টতা আসতে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ২১শে জুলাইয়ের তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরির ঘোষণা করেন। সেই ঘোষণার পর থেকেই বিজেপি প্রশ্ন তোলে তৃণমূলের ‘দুর্গা-প্রীতি’ নিয়ে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে দুর্গাপুরের এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বক্তব্য শুরু করেন “জয় মা দুর্গা”, “জয় মা কালী” ধ্বনি দিয়ে। এর জবাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই কটাক্ষ করে বলেন, “ঠেলায় না পড়লে বেড়াল গাছে ওঠে না।”

এর পরেই মঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন ‘দুর্গা অঙ্গন’ গঠনের পরিকল্পনা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, হিন্দুত্বের প্রশ্নে বিজেপির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় মমতা কোনও ফাঁক রাখতে চান না। এর আগে তিনি জগন্নাথ ধাম নির্মাণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলায়। এবার ‘দুর্গা অঙ্গন’ কোথায় গড়ে উঠবে, তা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক ও সামাজিক চর্চা।

বিজেপির বিভিন্ন স্তরের নেতারা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ‘তোষণের রাজনীতি’ করার অভিযোগ তুলে আসছেন। এমনকি, রাজ্যে দুর্গাপুজোর বিসর্জন কিংবা সরস্বতী পুজোয় ‘বাধা’ দেওয়া হয়েছে বলেও একাধিক মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রসঙ্গেই সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “অসমে কালীর মন্দির ভেঙে দেওয়া হল। যদি এমন কিছু বাংলায় ঘটত, তা হলে ওরা কী করত? আগে বলত, আমি নাকি দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজো করতে দিই না। আর এখন ভোটের সময় এলেই কালী-দুর্গার নাম মনে পড়ে!” তিনি আরও বলেন, “মা দুর্গা আমাদের জাতীয় গর্ব, জাতীয় সম্পদ। যেমন জগন্নাথ ধাম করেছি, ঠিক তেমনই তার অনুকরণে ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরি করব, যাতে মানুষ সারা বছর ধরে সবকিছু দেখতে পান।”