ডিজিটাল ডেস্ক ১৩ই অগাস্টঃ এবারের ভোটের দামামা কি বেজে গেল আগেই ? যদিও ভোট আসতে এখনও বেশ কতগুলো মাস বাকি। তবে তার আগেই বাংলায় SIR ইস্যুতে তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি । সেই পরিপ্রেক্ষিতেই আগেই দিল্লিতে কমিশন তলব করেছিল রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পান্থকে। ইতিমধ্যেই কমিশনের তলব পেয়ে দিল্লির উদ্দ্যেশে রওনা দিয়ে দিয়েছেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ (CS Manoj Pant)। নবান্ন সূত্রে খবর, কোনওরকম টানাপড়েন এড়িয়ে নির্দিষ্ট সময়েই কমিশনের সামনে হাজিরা দেবেন তিনি। চারজন নির্বাচনী অফিসার-সহ মোট পাঁচজনকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তবে সেই নির্দেশ পুরোপুরি কার্যকর না করে, রাজ্য সরকার তাঁদের শুধুমাত্র নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়,যা ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক।
ভোটের দামামা এখনও ঠিকভাবে বেজে উঠতে পারেনি । তার মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ঠোকাঠুকি যেন ক্রমাগতই বেড়েই চলেছে। দেশজুড়ে চলছে এসআইআর বা নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ। এই প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্ব ও দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে রাজ্যের চারজন নির্বাচনী কর্মী এবং এক অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন তাঁদের সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেয় এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের কথাও জানায়। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রকাশ্য সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনও কর্মীকেই সাসপেন্ড করা হবে না। ভোট ঘোষণার আগেই কমিশনের এই পদক্ষেপ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
শুধু তাই নয় বিগত কইয়েকদিন ধরেই এই SIR সহ ‘ভোট চুরি’ অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে প্রবল সরব হয়েছে বিরোধীরা। বেশ কয়েকবার সংসদে এই নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব এনেছে বিরোধীরাও। উল্লেখ বিহার নির্বাচনের আগে সেখানে এই SIR এর প্রভাবে ইতিমধ্যেই ৬৫ লাখের নাম বাদ বলে শোনা যাচ্ছে । যা নিয়ে দেশ জুড়ে রাজনীতি তুঙ্গে । এই আবহে SIR নিয়ে সরগরম বাংলার রাজনীতিও । অবশ্য পাশাপাশি বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য বাংলায় বাইরে থেকে আশা বাংলাদেশি রহিঙ্গাতে ভর্তি হয়ে গেছে বঙ্গের নানা কোনা। শুধু তাই নয় বেশ কয়েকবার বাংলার বিভিন্ন জায়গা থেকে বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। যদিও যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে ভারতীয় প্রামান্য কোন নথি পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে সূত্রের খবর । প্রসঙ্গত কয়েকদিন আগে সান্তা পাল নামে এক বাংলাদেশি মডেল গ্রেফতার হয়।
সেই নিয়ে বারংবারই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সরব হয়েছেন নানান জায়গা থেকে। তাদের বক্তব্য এই বাংলাদেশি রহিঙ্গাদের বাংলায় বেআইনিভাব থাকতে সাহায্য করছে রাজ্য সরকার। যা সম্পূর্ণভাবে নস্যাত করে দিয়ে রাজ্য সরকার বলছে ঘুরিয়ে NRC করার মতলবে রয়েছে কেন্দ্রের সরকার। পাশাপাশি রাজ্য সরকার সহ দেশের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করছে নির্বাচন কমিশন বিজেপির কথায় উঠছে বসছে। তারই প্রতিফলন SIR অভিযোগ বিরধিদের।
আগেই কমিশন রাজ্যকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই সময়সীমার মধ্যেও রাজ্য প্রশাসন অভিযুক্তদের বরখাস্ত না করে শুধুমাত্র নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়। এই সিদ্ধান্তকে নির্দেশ লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন। ফলে এবার আরও কঠোর পদক্ষেপে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে তলব করা হয়েছে। কমিশনের তরফে পাঠানো নোটিসে জানানো হয়েছে,বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে তাঁকে দিল্লিতে কমিশনের সামনে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে—কেন কমিশনের নির্দেশ মানা হয়নি। নির্বাচন কমিশনের মতে, এটি শুধু একটি নির্দেশ উপেক্ষা নয়, বরং একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদার বিষয়। এই ঘটনার জেরে রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে টানাপোড়েন আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকরা।