Controversy On Independence Day Poster : গান্ধী-সুভাষ-ভগৎ সিংয়ের মাথার উপরে সাভারকর! এ কেমন পোস্টার কেন্দ্রের?

67

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৬ অগাস্ট : স্বাধীনতা দিবসে পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের একটি পোস্টার ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক (Controversy On Independence Day Poster)। পোস্টারে মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং ভগৎ সিংয়ের সঙ্গে বিনায়ক দামোদর সাভারকরের ছবি একসঙ্গে দেখানো হয়েছে—যা নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছেন।

তাদের অভিযোগ, এমন একজন ব্যক্তিকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যিনি একসময় ‘জাতির পিতা’ মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে, যিনি নিজেকে ব্রিটিশ সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে ‘অনুগত ভৃত্য’ বলে স্বীকার করেছিলেন, তিনি কীভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক নেতাজি বা ভগৎ সিংয়ের পাশে স্থান পেতে পারেন?

কংগ্রেসের জাতীয় সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত বিতর্কিত পোস্টার নিয়ে এক্স-এ তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁর কটাক্ষ, “যে সাভারকর ব্রিটিশদের কাছে ক্ষমাপত্র জমা দিয়েছিলেন, তাঁকে মহাত্মা গান্ধীর উপরে স্থান দেওয়া হয়েছে—সেই অপরিহার্য গান্ধীজি, যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন।” তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “সাভারকরকে পোস্টারে রাখা হলেও কেন বাদ পড়েছেন জওহরলাল নেহরু ও সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান ব্যক্তিত্ব?” তাঁর অভিযোগ, “প্রতিবার স্বাধীনতা দিবসে মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ইতিহাস বিকৃতির নতুন এক অধ্যায় তুলে ধরে। প্রকৃত নায়কদের সরিয়ে বিশ্বাসঘাতকদের সামনে আনা হয়।” শেষে তিনি তীব্র ভাষায় লেখেন, “যাদের পূর্বপুরুষরা ব্রিটিশদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিভাজনের বীজ পুঁতেছিল, এবং যাদের ছড়ানো ঘৃণা আজও সমাজে আতঙ্ক ছড়ায়—তাদের কাছ থেকে আর কী-ই বা আশা করা যায়?”

উল্লেখযোগ্যভাবে, সাভারকরকে ঘিরে বিজেপির অবস্থান আগেও বহুবার বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছে। যদিও তাঁর আন্দামানের সেলুলার জেল থেকে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পাওয়ার প্রসঙ্গ অনেক সময় পাশ কাটানো হয়েছে, তবুও ‘রাজনৈতিক হিন্দুত্ব’-এর জনক হিসেবে তাঁর পরিচিতি অস্বীকার করার উপায় নেই। সাভারকর যে বিজেপি ও আরএসএসের আদর্শিক ভিত্তির অন্যতম স্তম্ভ, তা নিয়ে বিশেষ বিতর্ক নেই। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তাঁকে বারবার সামনে এনে হিন্দুত্বের আবেগকে উসকে দেওয়াই বিজেপির কৌশল। স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত পোস্টারে সাভারকরকে প্রাধান্য দেওয়া নিয়ে ফের একবার সেই পুরনো বিতর্ক নতুন করে ঘনীভূত হয়েছে।