Election Commission News: ইন্ডিয়া জোটের সদস্যদের প্রতিলিপি হলফনামা, বিরোধী প্রশ্নবানে নির্বাচন কমিশন ?

54

ডিজিটাল ডেস্ক ১৮ই অগাস্টঃ বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন, যাকে বলা হচ্ছে ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’ (SIR)। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বিহারে শেষবার এই প্রক্রিয়া হয়েছিল ২০০৩ সালে, আর বাংলায় হয়েছিল ২০০২ সালে। ‘ভোট চুরি’ বিতর্কে নির্বাচন কমিশনের জোরালো তোপ। রবিবার নাম না করে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে চ্যালেঞ্জ ছোড়েন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। তিনি বলেন,‘হয় হলফনামা দিন, না হলে দেশের কাছে ক্ষমা চান।’ তার পরেই সোমবার সংসদের বাইরে হলফনামার প্রতিলিপি হাতে বিক্ষোভ বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের সাংসদদের। এই আবহে দাড়িয়ে SIR এর নতুন নাম করণ করে তৃণমূল। তৃণমূল SIR এর নাম দিয়েছে সাইলেন্ট ইনভিজিবল রিগিং(Election Commission News)। হলফনামার প্রতিলিপি হাতে বিক্ষোভের সামনের সারিতে সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবের সঙ্গে দেখা গেল সংসদে তৃণমূলের দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। কমিশনের ‘হলফনামা’ হুঁশিয়ারির পাল্টা স্লোগান ইন্ডিয়া জোটের সাংসদদের।

উল্লেখ্য, কর্নাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভায় নির্বাচনে ‘কারচুপি’ নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তিনি কমিশনের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘প্রথমে অতি সন্তপর্ণে ভোট চুরি করা হচ্ছিল, এখন SIR-এর মাধ্যমে তা প্রকাশ্যে হচ্ছে। সেটা আমি হতে দেব না।’ বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট চুরি করে জেতার অভিযোগ রাহুলের। তাঁকে সমর্থন করে তৃণমূল-সহ গোটা ইন্ডিয়া জোট। রাহুলের মতোই ভোট চুরি নিয়ে সরব হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ যাদবও।

বিরোধী প্রশ্নের মুখোমুখি নির্বাচন কমিশন

১. SIR করার আগে নির্বাচন কমিশন কেন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে পরামর্শ করেনি?

২. বিহারে নির্বাচনী বছরেই (চলতি বছরেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন) বিশেষ নিবিড় সংশোধন না করার বিষয়ে ECI-র নিজস্ব নির্দেশিকা কেন লঙ্ঘন করা হয়েছে?

৩. বন্যার মধ্যে বিহারে কোনও নোটিস বা প্রস্তুতি ছাড়াই SIR করার এত তাড়াহুড়ো কেন? যদিও কমিশন দাবি করেছে, ২০০২ সালেও একই সময়ে বিহারে ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধন হয়েছিল।

৪. SIR-এর সময়ে (২৫ জুন-২৫ জুলাই) বিহারে ভোটার তালিকায় কতজনকে যুক্ত করা হয়েছে?

৫. কোনও নথি সংযুক্ত না করে কতজন ভোটারের গণনা ফর্ম জমা দেওয়া হয়েছে?

৬. BLO-এর দ্বারা কতজনকে ফর্ম ‘সুপারিশ করা হয়নি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে? কীসের ভিত্তিতে?

৭. SIR-এর চলাকালীন বিদ্যমান তালিকায় কতজন বিদেশির নাম সনাক্ত করা হয়েছে?

৮. বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর সংবাদ সম্মেলনের পরে ভোটার তালিকার ফর্ম্যাট কেন পরিবর্তন করা হয়েছিল?

৯. অনুরাগ ঠাকুরের (বিজেপি সাংসদ) কাছ থেকে নির্বাচন কমিশন কেন হলফনামা দাবি করেনি?

১০. অতীতে দাখিল করা হলফনামার ভিত্তিতে (যেমন SP-র দ্বারা) কেন কোনও তদন্ত করা হয়নি?

রাহুলের অভিযোগ নিয়ে পাল্টা বৈঠক করে অনুরাগ ঠাকুরও বিরোধীদের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির অভিযোগ করেন। ছয়টি আসনের তথ্য তুলে ধরে কংগ্রেস-সহ ইন্ডিয়া জোটকে আক্রমণ করেছিলেন তিনি। সেই তালিকায় ছিল ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রও।

তৎক্ষণাৎ তার জবাব দেন ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,‘বিজেপির অভিযোগ ছিল আমার কেন্দ্রের (ডায়মন্ড হারবার) একটি বাড়িতে ৫০ জন ভোটার আছেন, এঁরা সবাই নাকি ভুয়ো ভোটার। বাস্তবে তাঁদের কোনও অস্তিত্ব নেই। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যে। আমি ওই বাড়ির সদস্য ৪৭ জনের মধ্যে ৪১ জন সদস্যের বক্তব্যের ভিডিয়ো করেছি, সমস্ত নথি ও প্রমাণ-সহ।’ সূত্রের খবর, সেই ভিডিয়ো অনুরাগ ঠাকুরকে পাঠান অভিষেক। অনুরাগ ঠাকুরের ভোট চুরি নিয়ে বৈঠকের কথা মনে করিয়ে বিরোধীদের প্রশ্ন, তাঁর কাছে কেন হলফনামা চাওয়া হচ্ছে না?

নির্বাচন কমিশনের রবিবারের সাংবাদিক বৈঠকের পরই সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব অভিযোগ করেন, উত্তরপ্রদেশে তাঁর দলের জমা দেওয়া হলফনামার প্রাপ্তি অস্বীকার করছে কমিশন। হলফনামার ডিজিটাল রসিদ তুলে ধরে তিনি পাল্টা দাবি করেন, ‘নির্বাচন কমিশনকেও হলফনামা দিতে হবে যে, আমাদের কাছে পাঠানো ডিজিটাল রসিদ সঠিক। অন্যথায় ডিজিটাল ইন্ডিয়াও সন্দেহের মুখে পড়বে।’ এর পরেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সোমবার সকাল থেকে সংসদের বাইরে হলফনামার প্রতিলিপি হাতে আরও জোরালো বিক্ষোভ ইন্ডিয়া জোটের।