Mamata Against Kalyani AIIMS : কল্যাণী এইমসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মমতা! মেন্টাল হেলথের নামে এনআরসি সার্ভে?
ডিজিটাল ডেস্ক, ১৮ অগাস্ট : কেন্দ্রের অধীনস্থ কল্যাণী এইমসের বিরুদ্ধে মেন্টাল হেলথ সার্ভের আড়ালে ঘুরপথে এনআরসি (NRC) করার অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই অভিযোগ সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন কল্যাণী এইমসের এক আধিকারিক। তাঁর দাবি, এটি সম্পূর্ণভাবে একটি নিয়মমাফিক সমীক্ষা, যার সঙ্গে এনআরসির কোনও যোগ নেই (Mamata Against Kalyani AIIMS)।
সোমবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কল্যাণী এইমসের ভূমিকা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “কল্যাণী এইমসকে আমরা অনেকভাবে সাহায্য করেছি। অথচ উদ্বোধনের সময় আমাদের জানানো হয় না। এখন মেন্টাল হেলথের নামে ঘুরপথে এনআরসির উদ্দেশ্যে সার্ভে চালানো হচ্ছে।
যদি কোনও সংস্থা আপনাদের বাড়িতে সার্ভে করতে আসে, আগে রাজ্য সরকারের থেকে জেনে নেবেন। রাজ্য সরকার যখন নিজে এমন কিছু করবে, তখন তা আগেই জানিয়ে দেবে। কিন্তু মেন্টাল হেলথের নাম করে ঘরে ঘরে ঘুরে আসলে একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছে। তাহলে সরাসরি সেই দলের হয়েই কাজ করুক না—কোনও লোক পাচ্ছে না নাকি?”
কল্যাণী এইমসের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কল্যাণী এইমসকে বলব, আপনাদের মূল দায়িত্ব রোগীদের চিকিৎসা ও তাঁদের সুস্থ করা। আমরা আপনাদের আগেও সাহায্য করেছি, ভবিষ্যতেও করব। কিন্তু দয়া করে এই ধরনের খেলায় নামবেন না। রাজ্যের নিজস্ব মেন্টাল হেলথ বিভাগ আছে—এটা আপনাদের কাজ নয়।”
সাধারণ মানুষের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “অনেক সংস্থা বা এজেন্সির নাম করে এখন বাড়ি বাড়ি ঘুরে সার্ভে করা হচ্ছে, বলা হচ্ছে আপনার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে। এসব নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। রাজ্য সরকারি আধিকারিক ছাড়া কাউকে কোনও ব্যক্তিগত তথ্য দেবেন না। সজাগ থাকুন, সাবধানে থাকুন।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী বারবার দাবি করে আসছেন, SIR প্রকৃতপক্ষে NRC ও CAA-র নতুন রূপ। তাঁদের অভিযোগ, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটার তালিকা থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকৃত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, এই কাজে নির্বাচন কমিশন কার্যত বিজেপি সরকারের নির্দেশেই কাজ করছে।
এবার নির্বাচন কমিশনের পর কল্যাণী এইমসের বিরুদ্ধেও বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, মেন্টাল হেলথ সার্ভের নাম করে আসলে এনআরসির প্রস্তুতি চালানো হচ্ছে। যদিও কল্যাণী এইমসের এক আধিকারিক এসব অভিযোগ নাকচ করে জানিয়েছেন, এটি একটি নিয়মিত সমীক্ষা, যা আগেও হয়েছে এবং এর সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও সম্পর্ক নেই।
তবে এই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে কল্যাণী এইমস স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, চলতি সমীক্ষায় যে প্রশ্নাবলী ব্যবহার করা হচ্ছে, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্সেস (NIMHANS)-এর অনুমোদিত। ফলে এই সমীক্ষার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ও নৈতিক মান সর্বোচ্চ পর্যায়ের বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
তাঁরা আরও জানিয়েছেন, এই স্বাস্থ্য সমীক্ষা শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে নয়, বরং গোটা দেশজুড়ে—সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে—একই পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হল দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের বর্তমান চিত্র তুলে ধরা এবং ভবিষ্যতের প্রয়োজন নির্ধারণে তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া।