ডিজিটাল ডেস্ক, ১৯ অগাস্ট : সারদা চিটফান্ড কাণ্ডে দায়ের হওয়া তিনটি প্রতারণার মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং অন্যতম শীর্ষকর্ত্রী দেবযানী মুখোপাধ্যায়। ২০১৩ সালে হেয়ার স্ট্রিট থানায় তাঁদের নামে তিনটি এফআইআর দায়ের হয়েছিল, যেখানে মোট ১০-১৫ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল। পরবর্তীতে রাজ্য সরকারও এই মামলাগুলির তদন্তে নামে।
মঙ্গলবার কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালত ওই তিনটি মামলাতেই দু’জনকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করে। আদালতের রায়ে তাঁরা প্রতারণার অভিযোগ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি পেলেন (Saradha Scam Case Bail Update)।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকার পক্ষের তরফে ৫০ জন সাক্ষীকে তালিকাভুক্ত করা হলেও আদালতে হাজির করা সম্ভব হয় মাত্র ১৫ জনকে। তাঁদের বয়ানেও প্রতারণা বা জালিয়াতির কোনও সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি। এই কারণেই সারদা কাণ্ডের তিনটি মামলায় সুদীপ্ত সেন এবং দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে বেকসুর খালাস দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত।
তবে এই খালাসের রায় সত্ত্বেও দু’জনের কারামুক্তি এখনই হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের দায়ের করা মোট ২৫০টি মামলার মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ২১৪টিতে জামিন পেয়েছেন তাঁরা। বাকি মামলাগুলিতে জামিন মেলেনি, ফলে জেলেই থাকতে হচ্ছে সুদীপ্ত ও দেবযানীকে।
বর্তমানে দেবযানী রয়েছেন দমদম সেন্ট্রাল জেলে এবং সুদীপ্ত রয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলে। আইন মহলের মতে, সারদা চিটফান্ড কাণ্ডে এই প্রথম কোনও মামলায় আদালতের রায় সামনে এল, যা ভবিষ্যতের অন্যান্য মামলাগুলির গতিপথেও প্রভাব ফেলতে পারে।
২০১৩ সালে সারদা কেলেঙ্কারি সামনে আসার পর, সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন ও অন্যতম শীর্ষকর্ত্রী দেবযানী মুখোপাধ্যায় কাশ্মীরের সোনমার্গে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই বছরই সেখান থেকেই তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন থেকেই দু’জনই জেলে বন্দি।
২০২৩ সালে দেবযানী সাময়িকভাবে কয়েক ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেলেও, পরে আবার জেলে ফিরে যান। সারদা চিটফান্ডে প্রতারিত হাজারো মানুষ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ও থানায় অভিযোগ জানানোর পরই মামলাগুলি সামনে আসে।
পরবর্তীতে মামলার তদন্তভার নেয় সিবিআই এবং একাধিক মামলা রুজু করে। একইসঙ্গে সুদীপ্ত সেন ও সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছে ইডি (প্রবীণ আর্থিক তদন্ত সংস্থা) ও সেবি (শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা)–ও।
এই মামলাগুলির অনেকগুলিতেই তদন্ত এখনও চলছে, ফলে আপাতত কারামুক্তির সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
২০১৩ সালে সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে পালিয়ে যান কাশ্মীরের সোনমার্গে। তবে দীর্ঘদিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকলেও, ওই বছরই কাশ্মীর থেকে তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সময় থেকেই তাঁরা জেলে বন্দি।
২০২৩ সালে দেবযানী সাময়িকভাবে কয়েক ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেলেও, ফের তাঁকে জেলে ফিরে যেতে হয়।
সারদা অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অসংখ্য মানুষ থানায় অভিযোগ জানান। পরে তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই এবং একাধিক মামলা দায়ের করে। পাশাপাশি, অর্থনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগে ইডি এবং সেবিও সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা রুজু করে।