Calcutta University Student: বাংলায় ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে বেধড়ক মার কলেজের ছাত্রকে, বাংলা বললেই হেনস্থা ?
ডিজিটাল ডেস্ক ২১ অগাস্টঃ বাংলা ও বাঙালি ইস্যুতে গত কয়েকমাস ধরেই রাজ্য থেকে দেশীয় রাজনীতি কয়েকবার বেশ উতপ্ত হয়েছে। এবার সেই খাস কলকাতায় আক্রান্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কলেজের ছাত্র। এর আগেও বাইরের রাজ্যগুলিতে দেখা গেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার , শুধুমাত্র বাংলা বলে বাংলাদেশী সন্দেহে। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কলকাতার বুকে বাংলাদেশি সন্দেহে চরম হেনস্থার শিকার একাধিক পড়ুয়া। বাংলায় কথা বলায় বাংলাদেশি সন্দেহে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক পড়ুয়ার উপর ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার অভিযোগ কিছু হিন্দিভাষী দোকানদারের বিরুদ্ধে(Calcutta University Student)। এই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই আক্রান্ত পড়ুয়া। প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহল থেকে বাংলায় কি করে আক্রান্ত হচ্ছে এক বাঙালি ? যদিও এই পরিপ্রেক্ষিতে এখনও কোন সদ উত্তর পাওয়া যায়নি বাংলার রাজনৈতিক মহল থেকে ?
ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ মুচিপারা থানা এলাকায়। গতকাল রাত বারোটা নাগাদ কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিক পড়ুয়াদের উপর স্থানীয় দোকানদার ও লোকজনরা ঘেরাও করে হামলা করে। বাংলাদেশি সন্দেহে পড়ুয়াদের মারধর করে বলেও অভিযোগ উঠেছে। উল্টোদিকে স্থানীয় লোকজন ও দোকানদারদের অভিযোগ, তাদের দোকানপাট ভাঙচুর হয়েছে। এই ঘটনায় বাংলাদেশি সন্দেহে পাঁচজন কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিক পড়ুয়া আহত হয়েছেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাঝরাতে তাঁদের ভর্তি করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলেই জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মোবাইলের সরঞ্জাম কিনতে যান শিয়ালদহ ব্রিজের নীচে এক দোকানে গিয়েছিলেন। ফোনের দাম প্রসঙ্গে দোকানদারের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। দোকানদার ছিলেন হিন্দিভাষী। এদিকে পড়ুয়া বাংলায় কথা বলায় আপত্তি জানাতে শুরু করেন। বাংলায় কথা বলায় পড়ুয়াকে বাংলাদেশি সন্দেহে মারধর শুরু করেন।

এরপর হস্টেলে পৌঁছে সহপাঠীদের বিষয়টি জানান ওই আহত পড়ুয়া। এরপর কয়েকজন মিলে সেই এলাকায় পৌঁছে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন। সেই সময় আরও কয়েকজন দোকানদার ও স্থানীয় কিছু লোক ওই পড়ুয়াদের উপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পড়ুয়াদের উপর হামলা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাসেই ভিন রাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে একাধিক পরিযায়ী শ্রমিক চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যা ঘিরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও রাজ্য সরকার তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। ওড়িশা, মুম্বই, হরিয়ানা, একাধিক রাজ্যে চরম হেনস্থার শিকার হয়েছেন বাংলার শ্রমিকরা।
দিন কয়েক আগেই আরও এক বিজেপি শাসিত রাজ্য ওড়িশায় এক পরিযায়ী শ্রমিক হেনস্থার শিকার হন। বাংলাদেশি সন্দেহে আটক ওড়িশায়। চরম হয়রানির শিকার হুগলির পরিযায়ী শ্রমিক হন। যাবতীয় প্রমাণপত্র থাকা সত্ত্বেও চলে চরম হেনস্থা। অনেক কষ্টে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরেন রবীন্দ্র নগরের দেবাশিস দাস। জানান হয়রানির কথা। জানা গেছে, ওড়িশার ঝারসুগুডা জেলায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হয়। কাজে ওড়িশায় গিয়েছিলেন জুন মাসের ১৪ তারিখ। এক সংস্থার সঙ্গে কাজে গিয়েছিলেন হুগলির চুঁচুড়া ২ নং রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা দেবাশিস দাস। শুধু তিনি এক ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও বেশ কয়েকজন। তাঁরা ওই সংস্থার ওড়িশায় চলা বিভিন্ন প্রজেক্টের ফায়ার সিস্টেমের কাজ করেন।
দেবাশিসের অভিযোগ, ওই দিন কাজের জায়গায় পৌঁছনো মাত্রই বিনা কারণে তাঁকে আটক করা হয়। তারপর ওড়িশার স্থানীয় পুলিশের দ্বারা চরম হয়রানির শিকার হন তিনি। আটক করার পর তাঁদের কাজের জায়গা থেকে তুলে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। কী কী ডকুমেন্ট আছে, তা দেখতে চাওয়া হয়। দেবাশিসের কাছে পাসপোর্ট, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড, জন্মের শংসাপত্র সহ স্কুলের মাধ্যমিকের এবং পুলিশ ভেরিফিকেশান সার্টিফিকেট সবই ছিল। তিনি সেই যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দেখান। কিন্তু কোনও লাভ হয় না। ওই আধিকারিকরা তাঁর কাছে থাকা সরকারি পরিচয়পত্রকে কোনও গুরুত্ব দেন না। সেগুলো দেখার পড়ে ছাড়া তো দূরের কথা, উল্টে তাঁর ফোন কেড়ে নেন। তারপর থেকে বাড়িতে পরিজনদের সঙ্গে বা সংস্থার ঠিকাদারের সঙ্গেও কোনও কথা তাঁকে আর বলতে দেওয়া হয়নি।