Naushad Siddiqui: ব্যাঙ্কশাল আদালতে নওশাদ, গ্রেফতারির জেরে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ-হরতাল

72

ডিজিটাল ডেস্ক ২১ অগাস্টঃ এসআইআর-ওয়াকফ ইস্যুতে প্রতিবাদের নামে ধর্মতলায় বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠেছিল আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গতকালই নওশাদ সহ ৯৫ জনের গ্রেফতার করা হয়। আজ তারই প্রতিবাদে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হরতাল শুরু হয়। ব্যাঙ্কশাল কোর্ট , হাড়োয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় সকাল থেকেই তীব্র বিক্ষোভ দেখা যায়। নৌশাদ সিদ্দিকির গ্ৰেফতারের প্রতিবাদে ISF-এর বিক্ষোভ। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ISF কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভ-অবরোধ। নৌশাদ সিদ্দিকির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে হাড়োয়া -রাজারহাট রোডে বিক্ষোভ। প্রায় একঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে এলাকায়, পরে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলন প্রত্যাহার। যদিও ইতিমধ্যেই নওশাদকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়েছে (Naushad Siddiqui)।

নওশাদের গ্রেপ্তারি ঘিরে ক্ষোভ
গত কয়েক মাস ধরেই ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। বেআইনি দখল, দুর্নীতি এবং স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছে। নওশাদ সিদ্দিকি সেই বিষয়টি নিয়ে বারবার রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন। তাঁর দাবি, ওয়াকফ বোর্ডের কার্যকলাপ নিয়ে সরকার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে চাইছে না। বুধবার ধর্মতলায় সেই দাবিতেই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন তিনি। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন বিক্ষোভটিকে অনুমতি ছাড়া এবং জনজীবনে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগ তুলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

এই ঘটনার পর আইএসএফ নেতৃত্ব ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানিয়েছে,‘‘সরকার বিরোধী কণ্ঠরোধ করতে চাইছে। নওশাদকে ভয় দেখিয়ে আন্দোলন থামানো যাবে না।’’ দলের তরফে বৃহস্পতিবার সকালেই রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয় । যার জেরে বিভিন্ন জায়গায় সকাল থেকেই বিক্ষোভ দেখা যায়। হাড়োয়া সহ ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বাইরেও তুমুল হই-হট্টগোল শুরু হয় ,নওশাদ সহ ৯৫ জনের গ্রেফতারির প্রতিবাদে ।

রাজারহাটে অবরোধে অচলাবস্থা

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হাড়োয়া–রাজারহাট রোডে ভিড় জমতে থাকে। আইএসএফ কর্মীরা হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে রাস্তা আটকে বসে পড়েন। তাঁদের স্লোগান,“নওশাদকে মুক্তি দিতে হবে, গণতন্ত্র বাঁচাতে হবে।” ফলে অফিস যাত্রার সময় থেকেই সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। বহু গাড়ি আটকে পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। রাজারহাট, দমদম, বারাসতগামী বাস ও প্রাইভেট গাড়িগুলি আটকে যায়। পুলিশের তরফে পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা হলেও কর্মীরা দাবি তোলেন, নওশাদের মুক্তির আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।

পুলিশের সঙ্গে কর্মীদের ধস্তাধস্তি

ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরোধ চলতে থাকায় শেষপর্যন্ত বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কর্মীদের সরাতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আইন ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে আইএসএফ নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এটি কেবল শুরু, নওশাদ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া

নওশাদের গ্রেপ্তারিকে কেন্দ্র করে অন্যান্য বিরোধী শিবিরও সমালোচনায় সরব। কংগ্রেস ও সিপিএমের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিকভাবে বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার রয়েছে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের। অথচ পুলিশ সেই অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে শাসক দলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, নওশাদের নেতৃত্বে আইএসএফ পরিস্থিতি অস্থির করতে চাইছে এবং সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে।

গতকালই নওশাদের ঘটনায় হয়েছিল ২ টি থানায় অভিযোগ দায়ের হেয়ার স্ট্রিট এবং বউবাজার থানায়। পুলিশের কাজে বাধা, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, অনৈতিকভাবে জোট বেঁধে বিক্ষোভের চেষ্টায় জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু। বুধবার গ্রেফতার হওয়ার পর জোড়াসাঁকো থানাতেই রাত কাটান নওশাদ সিদ্দিকি। ISF এর অন্য কর্মীরা রাত কাটালেন সেন্ট্রাল ডিভিশনের বিভিন্ন থানায়। পুলিশের কাজে বাধাদান, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা ও রাস্তা আটকানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় বিধায়ককে।

সংশোধিত ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে ডাক ছিল ধর্নার। জায়গা, ধর্মতলা । নেতৃত্বে আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি । তবে বুধবার দুপুরে সেই প্রতিবাদ সভা আচমকাই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশি হস্তক্ষেপের সময় বিধায়ক নওসাদকে ঘুষি মারেন এক পুলিশকর্মী। মূহুর্তে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সূত্রের খবর রাজ্যে যে কোনও সময় চালু হতে পারে বিশেষ নিবিড় সংশোধনী আইন (SIR)। সেই সম্ভাবনার প্রতিবাদে এবং ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে আজ বুধবার বিক্ষোভের ডাক দেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তবে এ নিয়ে কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।