Aadhaar Can’t Be Accepted As Citizenship Proof : নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নয় আধার! নির্বাচন কমিশনকে সমর্থন সুপ্রিম কোর্টের
ডিজিটাল ডেস্ক, ১২ অগাস্ট : আধার কার্ড নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়—এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে সম্মতি জানাল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করেছে, আধার কার্ড শুধুমাত্র একটি পরিচয়পত্র হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে, কিন্তু তা নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণপত্র নয় (Aadhaar Can’t Be Accepted As Citizenship Proof)। আদালতের মতে, নির্বাচন কমিশনের অবস্থান যথাযথ এবং তা আইনসঙ্গত।
বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশন বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধন করে লাখে লাখে নাম বাতিল করেছে। এই মর্মে বেশ কিছুদিন আগেই অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রাইটস, তৃণমূল, কংগ্রেস সহ একাধিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। তারই শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ একথা জানিয়ে দেয়।
ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি বিহারের নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ায় আধার কার্ড অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে নির্বাচন কমিশন সেই পরামর্শ মানতে নারাজ। কমিশন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, বিশেষ নিবিড় সংশোধনের সময় আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড—কোনোটিকেই নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না।
বিহারের এসআইআর (SIR) বা নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে মোট ১১টি নথির তালিকা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বহু প্রান্তিক ও দরিদ্র ভোটারের কাছে এই ১১টি নথির কোনওটিই নেই। ফলে অনেকের নামই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে শুধুমাত্র এই নথিগুলি না থাকার কারণে।
এই প্রান্তিক মানুষের কথা মাথায় রেখে অতীতে সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছিল, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও রেশন কার্ডকেও গ্রহণযোগ্য নথি হিসেবে বিবেচনা করতে। কিন্তু এবার সুপ্রিম কোর্টই কমিশনের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে জানিয়ে দিল, কমিশনের অবস্থান সঠিক। আদালতের পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র আধার কার্ড থাকলেই কাউকে নিশ্চিতভাবে ভারতের নাগরিক বলে ধরে নেওয়া যায় না।
ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল, আধার কার্ড কখনও স্থায়ী বাসিন্দার উপযুক্ত প্রমাণ হতে পারে না। তাই শুধুমাত্র আধার থাকলেই ভোটদানের অধিকার স্বীকৃত হওয়া সম্ভব নয়। এদিন বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ কমিশনের এই যুক্তিকেই সমর্থন করে রায় দেয়।
আবেদনকারীদের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবাল আদালতে যুক্তি দেন, অনেক ভোটারের কাছে আধার, রেশন কার্ড এবং সচিত্র পরিচয়পত্র থাকলেও ভোট আধিকারিকেরা সেগুলিকে প্রমাণ হিসেবে মানতে চাইছেন না। এর জবাবে বিচারপতি কান্ত বলেন, এই ধরনের নথি প্রমাণ করতে পারে যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ওই এলাকায় বসবাস করেন, কিন্তু তা নাগরিকত্বের নির্দিষ্ট প্রমাণ নয়।
তিনি আরও বলেন, “বিহারে কেউই বৈধ নথি রাখেন না”—এই ধরনের যুক্তি অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী এবং গ্রহণযোগ্য নয়। আধার বা রেশন কার্ড থাকা মানেই তা নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণ নয়।
কমিশনের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী জানান, ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় কিছু ভুলত্রুটি থাকতেই পারে, তবে ৩০ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে সেই ভুল সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।
আর ভোটার তালিকা সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কমিশনের ক্ষমতা আদৌ আছে কিনা, সেই প্রসঙ্গে বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, “ইসিআইয়ের যদি সেই ক্ষমতা না-ই থাকত, তাহলে বিষয়টি এখানেই শেষ হয়ে যেত। কিন্তু যদি থাকে, তাহলে আদালতের তাতে কোনও আপত্তি নেই।”