Abhaya Parents Injured At Nabanna Abhijan : পুলিশের লাঠিচার্জ, অসুস্থ আরজি করের নির্যাতিতার মা! উঠল অবস্থান
ডিজিটাল ডেস্ক, ৯ অগাস্ট : মেয়ের জন্য বিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন। আরজি কর কাণ্ডের এক বছর পূর্ণ হওয়ার দিনে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তবে সেই চেষ্টা সফল হয়নি। বরং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন নির্যাতিতার মা (Abhaya Parents Injured At Nabanna Abhijan)। বর্তমানে তিনি বাইপাস সংলগ্ন মেডিকা হাসপাতালে ভর্তি।
নবান্ন অভিযান শুরু হতেই পার্ক স্ট্রিটে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সেই সময়ই অভিযোগ ওঠে, পুলিশের লাঠিচার্জের সময় নির্যাতিতার বাবা-মাকেও মারধর করা হয়। পরে আরজি করের নিহত চিকিৎসকের বাবা-মা নিজেরাও পুলিশের হাতে মার খাওয়ার কথা স্বীকার করেন। নির্যাতিতার মা জানান, “আমার হাতের শাঁখা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মাথায় মেরে ফুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।” পরবর্তী সময়ে তাঁরা রেসকোর্স চত্বরে ব্যারিকেডের সামনে অবস্থানে বসেন। কিন্তু নির্যাতিতার মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেই অবস্থান কর্মসূচি শেষ করতে হয়।
এদিনের বিক্ষোভ শুরু হতেই নির্যাতিতার বাবা-মা বলেছিলেন, পুলিশ প্রথম থেকেই তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করেছে। কার্যত চোর-পুলিশ খেলে তাঁদের নবান্ন অভিযানের জন্য আসতে হয়েছে। পরে পুলিশের উদ্দেশে নির্যাতিতার বাবার প্রশ্নও ছিল, “হাইকোর্ট আমাদের অনুমতি দিয়েছে, তাহলে আটকাচ্ছেন কেন?” তবে পুলিশ যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে। পাশাপাশি এও জানায়, তাঁদের একাধিক অফিসারও আহত।
সূত্রের খবর, অবস্থান বিক্ষোভ চলাকালীনই অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন নির্যাতিতার মা। পাশে থাকা আন্দোলনকারীরাই তাঁকে জল পান করান। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের কাছে বারবার জল চাইলেও তা দেওয়া হয়নি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শেষমেশ তাঁকে দ্রুত একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যদিকে, পার্ক স্ট্রিটের আরেক প্রান্তে অবস্থান বিক্ষোভে বসে থাকা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই খবর পেয়েই তাঁর অবস্থান তুলে নেন। পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি জানান, পুলিশ লাঠিচার্জ চালিয়েছে, যার ফলে শুধু নির্যাতিতার বাবা-মাই নন, শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নির্যাতিতার মাকে হাসপাতালে দেখতে যাবেন।
বিক্ষোভের শুরুতেই নির্যাতিতার বাবা-মা অভিযোগ করেছিলেন, শুরু থেকে পুলিশ তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তাঁদের কথায়, “চোর-পুলিশ খেলেই আমাদের আন্দোলনে আসতে হয়েছে।” পরে পুলিশের উদ্দেশে নির্যাতিতার বাবার প্রশ্ন, “হাইকোর্ট যখন অনুমতি দিয়েছে, তখন আপনারা আমাদের আটকাচ্ছেন কেন?” তবে এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। তারা পাল্টা দাবি করেছে, সংঘর্ষের সময় তাঁদের একাধিক অফিসারও আহত হয়েছেন।
পুলিশের তরফ থেকে সমস্ত অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য, “নির্যাতিতার মা-বাবাকে মারধরের কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই।” তাঁদের দাবি, এই অভিযানের জন্য কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। তাই নির্দেশ অমান্য করে যদি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়, তবে আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, মিছিলে কোনও রাজনৈতিক পতাকা ছিল না— এটি ছিল একেবারে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ। তবু সেখানে পুলিশ হামলা চালায়। তাঁর অভিযোগ, “জাতীয় পতাকাকেও অপমান করা হয়েছে।”
শুক্রবারই শুভেন্দু সতর্ক করেছিলেন, নির্যাতিতার মা-বাবার এই আন্দোলনে যদি পুলিশের হাতে একজনও আক্রান্ত হন, তাহলে আগামী ৭২ ঘণ্টা গোটা বাংলা স্তব্ধ করে দেওয়া হবে। শনিবারের ঘটনার পরে আরও এক ধাপ এগিয়ে শুভেন্দু বলেন, “এটা শুধু পুলিশের বর্বরতাই নয়, অভয়ার মা-বাবার প্রতি চরম অপমান।”
এই ঘটনার জেরে নবান্ন অভিযান ঘিরে আন্দোলনের আবহ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিচার না পাওয়ার ক্ষোভ এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধীরা— যার জেরে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উত্তাপ নতুন করে অনেকটাই বেড়েছে।