Air India Black Box Full Information : এয়ার ইন্ডিয়ার সেই বিমানের ব্ল্যাক বক্স থেকে তথ্য উদ্ধার সম্পূর্ণ! জানাল কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান মন্ত্রক
ডিজিটাল ডেস্ক, ২৬ জুন : দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের ব্ল্যাকবক্স থেকে ইতিমধ্যেই তথ্য উদ্ধার ও ডাউনলোড করা হয়েছে (Air India Black Box Full Information)। এখন সেই তথ্য বিশ্লেষণ করছে বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী সংস্থা, এএআইবি। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে। এর আগে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী স্পষ্ট করেছিলেন, ব্ল্যাকবক্সটি বিদেশে পাঠানো হয়নি—দেশের মাটিতেই সম্পূর্ণ পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে।
১২ জুন আহমেদাবাদের মেঘানিনগরের জনবহুল এলাকায় ভেঙে পড়ে একটি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান, যার গন্তব্য ছিল লন্ডনের গ্যাটউইক। উড়ানের মাত্র পাঁচ মিনিটের মাথায় ঘটে এই দুর্ঘটনা। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানায়, ১৩ জুন দুর্ঘটনাস্থলের একটি বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয় বিমানের ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR)। পরে, ১৬ জুন ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে উদ্ধার হয় ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (FDR)।
ব্ল্যাকবক্সের এই দুটি অংশ—CVR ও FDR—একটি বিমানের উড়ান সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ করে। FDR বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায়, বিমান কোন পথে, কত উচ্চতায়, কী গতিতে উড়ছিল এবং ইঞ্জিনের অবস্থা কেমন ছিল। অন্যদিকে, CVR থেকে উঠে আসে ককপিটে পাইলটদের আলোচনা, এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সেই মুহূর্তে কর্মী ও যাত্রীদের প্রতিক্রিয়ার কথোপকথন।
বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে অগ্রগতি—২৪ জুন, মঙ্গলবার, কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই ভারতীয় বায়ুসেনার একটি বিমানে অহমদাবাদ থেকে দিল্লিতে আনা হয় এয়ার ইন্ডিয়ার দু’টি ব্ল্যাক বক্স। ওইদিন দুপুর ২টার দিকে তদন্তকারী সংস্থার ডিজি প্রথম ব্ল্যাক বক্সটি (সামনের অংশ) এএআইবির দফতরে নিয়ে আসেন। বিকেল ৫টার দিকে পৌঁছয় দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্স (পিছনের অংশ)। মঙ্গলবার রাত থেকেই তদন্তকারী প্রযুক্তিবিদদের দল, ডিজির নেতৃত্বে, ব্ল্যাক বক্স থেকে তথ্য উদ্ধারের কাজ শুরু করে। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রথমে ক্র্যাশ প্রোটেকশন মডিউল (CPM) উদ্ধার করা হয়, আর পরদিন বুধবার ব্ল্যাক বক্সের মেমরি মডিউলও উদ্ধার করে তথ্য ডাউনলোড করা হয় এএআইবির গবেষণাগারে। বর্তমানে সিভিআর (ককপিট ভয়েস রেকর্ডার) এবং এফডিআর (ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার) থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ চলছে। তদন্তকারী সংস্থা আশা করছে, এই বিশ্লেষণের মাধ্যমেই পরিষ্কার হবে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এবং বিমানের ভেঙে পড়ার আগমুহূর্তে ঠিক কী ঘটেছিল। কেন্দ্রীয় বিমান পরিবহণ মন্ত্রক জানিয়েছে, তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে আইন মেনেই করা হচ্ছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার সেই দুর্ভাগ্যজনক বিমানে মোট ২৪২ জন যাত্রী ও কর্মী ছিলেন, যাদের মধ্যে ২৪১ জনেরই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় শুধু বিমানের আরোহীরাই নন, বিমানটি যেখানকার আবাসিক এলাকায় ভেঙে পড়ে, সেখানেও প্রাণ হারান আরও ৩৪ জন সাধারণ মানুষ।