ডিজিটাল ডেক্স ৬ই অগাস্টঃ গত কয়েকদিন ধরেই বিশ্বের বাজারে আমেরিকার শুল্কনীতি থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে তেল চুক্তি নিয়ে বেশ সরগরম বিশ্ব। যেখানে আমেরিকার বিভিন্ন দেশের প্রতি নানান শুল্ক আরোপ করায় মুশকিলের সম্মুখীন হচ্ছে বিশ্ব ,মত বিশেষজ্ঞ মহলের । এই তালিকায় বাদ যায়নি ভারতও । যেখানে ভারত আমেরিকাকে ‘বন্ধু ‘ বলেই তুলে ধরেছে বিশ্বের কাছে। পাশাপাশি রাশিয়া থেকে তেল কেনায় বেজায় চটেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিমধ্যেই ভারতের উপরে ২৫ শতাংশ ট্যারিফ তো চাপিয়েছেনই, সঙ্গে জরিমানার হুমকিও দিয়েছেন। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। এর মধ্যেই মঙ্গলবার রাশিয়ায় পৌঁছলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ডোভালের এই সফর যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল(Ajit Doval-Vladimir Putin)।
অনুমান করা হচ্ছে, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিকে কার্যত কাঁচকলা দেখিয়ে এই সফরে খনিজ তেল কেনা নিয়ে বড় চুক্তি হতে পারে রাশিয়ার সঙ্গে। জানা গিয়েছে, এই সফর পূর্ব নির্ধারিত ছিল। সেইমতোই মঙ্গলবার রাতে মস্কোয় পৌঁছন অজিত ডোভাল। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারত ও রাশিয়ার দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা। তবে ভারত-রুশ বাণিজ্য নিয়ে সাম্প্রতিক মার্কিন গোঁসা এই সফরকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করেছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, “বাণিজ্যের জন্য ভারত ভালো অংশীদার নয়। তারা আমাদের সঙ্গে যথেষ্ট বাণিজ্য করে। কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে বাণিজ্য করি না। তাই ভারতের উপর আমরা ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলাম। কিন্তু আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা বৃদ্ধি করা হবে। কারণ, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনছে এবং তারা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে রাশিয়াকে সাহায্য করছে।” পালটা প্রতিক্রিয়ায় ভারতও জানিয়ে দিয়েছে, ভারতকে নীতি ধর্ম শেখাতে আসা আমেরিকা নিজেই রাশিয়া থেকে বিপুল পণ্য আমদানি করে।
ভারতের বিদেশমন্ত্রক অবশ্য আগে থেকেই বলে আসছে, ‘তেল আমদানির নীতি একান্তভাবে দেশের জাতীয় স্বার্থ ও অর্থনৈতিক সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে।’ শুধু তাই নয়, ইউরোপের একাধিক দেশ সরাসরি বা পরোক্ষে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে বলেও তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে ভারত আমেরিকার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। পাশাপাশি কৌশলগত অংশীদারিত্ব রক্ষা করতে চায় রাশিয়ার সঙ্গেও। তাই অজিত ডোভালের মস্কো সফর নিছক কূটনৈতিক সৌজন্য সফর নয়, বরং এক জটিল আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সমীকরণের অংশ বলেই মত তাঁদের।