ডিজিটাল ডেস্ক ১লা অগাস্টঃ বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক বিজেপি শাসিত ভিন রাজ্যে গিয়ে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। ভারতবর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এ ধরনের ঘটনা মোটেই কাম্য নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে, পরিযায়ী শ্রমিক আক্রান্ত নিয়ে সরব নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন । তিনি বলেন, বাঙালিদের উপর যদি অত্যাচার, অবহেলা করা হয়, আমাদের আপত্তি থাকবে। তবে এটা শুধু বাঙালির প্রশ্ন নয়, গোটা ভারতের বিষয়(Amartaya Sen)।
বৃহস্পতিবারই বিদেশ থেকে শান্তিনিকেতনে নিজের বাড়ি ‘প্রতীচী’তে ফিরেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য সেন। সঙ্গে কন্যা নন্দনা দেবসেন। ‘ভারতরত্ন’ অর্থনীতিবিদকে ফুলের স্তবক দিয়ে স্বাগত জানান বোলপুর মহকুমাশাসক অয়ন নাথ ও বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগরওয়াল-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। ১৯ আগস্ট পর্যন্ত তিনি শান্তিনিকেতনেই থাকবেন বলেই জানা গিয়েছে। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অমর্ত্য সেন বলেন,“শুধু বাঙালি নয়, ভারতবর্ষ যুক্তরাষ্ট্রীয় দেশ। এখানে কোনও অঞ্চলের যে কোনও জায়গায় কেউ হেনস্তা হচ্ছেন, এটা আপত্তির কারণ। সে বাঙালি হোক বা পাঞ্জাবি হোক বা মাড়োয়ারি। আপত্তি থাকবেই। প্রথম কথা হল, সব মানুষকে সম্মান দেওয়ার উচিত। বিশেষত স্বদেশী মানুষের যে অধিকার আছে, তাঁদের মূল্য স্বীকার করতেই হবে। দুটোই প্রয়োজন আছে। তার উপর বাঙালিদের উপর যদি অত্যাচার হয়, অবহেলা হয়, যথেষ্ট আপত্তির কারণ থাকবে। অবহেলিত হলে নিশ্চয়ই বন্ধ করতে হবে। যাঁরা ভারতীয় তাঁদের পুরো ভারতবর্ষের উপর অধিকার আছে৷ শুধু একটা অঞ্চলের উপর নয়।”
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা ভাষার উপর ‘আক্রমণ’-এর প্রতিবাদে বোলপুর থেকে ‘ভাষা আন্দোলন’-এর সূচনা করেছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘বাংলা ভাষা অত্যন্ত মূল্যবান। চর্যাপদ থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, আরও অসংখ্য মনীষীর সৃষ্টি এই ভাষার মাধ্যমে হয়েছে। এই ভাষার যথাযথ মূল্য দেওয়া জরুরি। যদি তা অবহেলিত হয়, তবে সেটাও বন্ধ করতে হবে।’
ভারতের সংবিধানের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক সেন বলেন,‘ভারত একটি যুক্তরাষ্ট্র। শুধু কোনও একটি রাজ্যের মধ্যে নয়, দেশের প্রতিটি নাগরিকের গোটা দেশের উপর সমান অধিকার রয়েছে। এই জাতীয় ঐক্য ও সম্মানের নীতিই ভারতের ভিত্তি।’ ভারতীয় সংবিধানের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক সেনের বক্তব্য, “যারা ভারতীয় তাদের পুরো ভারতবর্ষের উপর অধিকার আছে। আর এটা শুধু একটা আঞ্চলিক অধিকার তা নয়।” বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের অত্যাচারের অভিযোগ শুনে তা নিয়েও কার্যত ক্ষোভপ্রকাশ করেন নবতিপর নোবেলজয়ী। বলেন, “ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার হচ্ছে ও বাংলা ভাষার উপর আক্রমণ নেমে আসছে। কখনওই তা কাম্য নয়।”