Amit Shah: শাহের বিলে পদ যাবে’প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীদের’! বিরোধী মতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের চেষ্টা

60

ডিজিটাল ডেস্ক ২০শে জুলাইঃ লোকসভার বাদল অধিবেশন শেষ হওয়ার একদিন আগে কেন্দ্র আনতে চলেছে এই সংশোধনী বিল। বুধবারই লোকসভায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন (সংশোধনী) বিল ২০২৫, সংবিধান (১১৩ তম সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস (সংশোধনী) বিল ২০২৫। তাতে বলা হয়েছে,প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এবং যে কোনও রাজ্যের মন্ত্রী যদি পাঁচ বছর বা তার বেশি শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে টানা ৩০ দিন জেলে থাকেন, তাহলে ৩১তম দিনে তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে বা নিজে থেকেই তিনি পদ খোয়াবেন। এই নিয়ে উত্তাল সংসদ। কিন্তু বিরোধীরা এই বিলের পিছনে অন্য রাজনীতি খুজে পাচ্ছে বলে তারা জানাচ্ছে। এই বিলে বলা আছে কেউ যদি কোনভাবে খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি অথবা গুরুতর আর্থিক দুর্নীতির মতো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকে। সেক্ষেত্রেই এই নিয়ম লাগু করতে চাওয়ার প্রস্তাব কেন্দ্র সরকারের(Amit Shah)।

এই পদক্ষেপ নিয়ে গর্জে উঠেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে (EC) অপব্যবহার করে SIR কার্যকর করার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরে, সরকার এখন আরও একটি ‘E’— অর্থাৎ ED-কে সক্রিয় করে এমন একটা আইন আনতে চাইছে, যাতে বিরোধী নেতাদের নিশানা করা যায়। এই আইনের সাহায্যে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে, জনগণের রায়কে বিকৃত করে রাজ্য সরকারগুলিকে ভেঙে ফেলা যায়।’ এখানেই শেষ নয়, অভিষেকের সংযোজন, ‘এই স্বৈরাচারী মানসিকতার এবং এই ভয়ঙ্কর সাংবিধানিক সংশোধনী বিলের তীব্র বিরোধিতা করছি। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ভারতের সরকার হিসেবে জনগণকে স্বস্তি দেওয়ার পরিবর্তে, কৃষক, শ্রমিক এবং দরিদ্র মানুষের প্রকৃত উন্নয়ন না করে এই চেষ্টা চালাচ্ছে। দেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার দায়িত্ব সম্পূর্ণ ভাবে পালনে ব্যর্থ হয়েছে এই সরকার। সংবিধানসম্মত দায়িত্ব পালনের বদলে এই সরকার কেবলমাত্র ক্ষমতা, সম্পদ ও নিয়ন্ত্রণ দখল করতে ব্যস্ত।’একইসঙ্গে মোদী সরকারকে জনগণবিরোধী, কৃষকবিরোধী, গরিববিরোধী, দলিতবিরোধী, আদিবাসীবিরোধী, ওবিসিবিরোধী, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোবিরোধী বলে সমালোচনা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি লেখেন, ‘বিরোধী দলগুলির সমর্থন এবং জাতীয় ঐক্য থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর (PoJK) পুনর্দখল করার সাহস দেখাতে পারেনি। তারা শুধু ফাঁকা বুলি কপচায়, কিন্তু যখন ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সীমান্ত সুরক্ষা এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রসঙ্গ আসে, তখন প্রকৃত সদিচ্ছা প্রকাশ করে না।’ তাঁর মতে, বিজেপিকে ভোট দেওয়া মানে দেশের সংবিধান বিক্রি করে দেওয়া।

সাংসদ মহুয়া মৈত্রর মতে, বিরোধীদের আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে। এক্স হ্যান্ডলে নতুন বিলের সমালোচনায় তিনি লিখেছেন, ‘২৪০ সাংসদ নিয়েই সংবিধান বদলানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। নতুন বিলে কেন্দ্রীয় কাঠামো ও বিচারব্যবস্থা দুটোকেই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে — কেন্দ্রীয় সরকার এখন ইডি ও সিবিআই ব্যবহার করে নির্বাচিত বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করতে পারবে এবং আদালতে দোষ প্রমাণিত না হলেও তাদের বরখাস্ত করতে পারবে।’ অন্যদিকে, সাকেত গোখলের দাবি, ভোট চুরি থেকে নজর ঘোরাতেই এই বিল পেশের ফন্দি খুঁজেছেন মোদী-শাহ।

তবে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, অতীতে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের গ্রেফতারি সহ দিল্লির মুখ্য়মন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি বিষয় নিয়েও। যেখানে তাদের গ্রেফতার করেছিল কোন কেন্দ্রীয় সংস্থাই। ৩০ দিনেরও বেশি সময় ধরে তাদেরকে জেলে রাখলেও, যদিও এখনও পর্যন্ত কোন পোক্ত প্রমান জোগাড় করতে পারেনি সেই সংস্থা। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধীমহলের প্রশ্ন থাকছে যে, এরকম ভাবেই আবারও একই পন্থা অবলম্বন করে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য মন্ত্রীদের আটক করার মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রতিস্থাপন করতে চাইছে বিজেপি এই বিলের মধ্য দিয়ে।