Anubrata Mondal Letter Mistake : ভুলে ভর্তি চিঠি লিখে ফের চিঠি দিতে বাধ্য হলেন অনুব্রত?

23

ডিজিটাল ডেস্ক, ৩০ মে : পুলিশ আধিকারিককে ফোনে হুমকি ও অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহারের অডিও ফাঁস হওয়ার পর, চাপের মুখে পুলিশের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বীরভূমের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের পুলিশমন্ত্রী মাননীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়—পুলিশের সাধারণ কর্মী থেকে উচ্চপদস্থ অফিসার—সবাই দিদির কাছের মানুষ। তাঁদের অপমান করার কথা আমি ভাবতেই পারি না। সাম্প্রতিক ঘটনায় আমি দুঃখিত। দিদির পুলিশের কাছে আমি একবার নয়, শতবার ক্ষমা চাইতে পারি। আমি নানা রকম ওষুধ গ্রহণ করি, আর দিদির পুলিশের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ তুললে আমার মাথা গরম হয়ে যায়। সত্যিই আমি দুঃখিত। তবে আপনাদের ভাবতে হবে—বোলপুর, সিউড়ি ও রামপুরহাটের বিশাল জনসমাগম দেখে কারা আতঙ্কিত? বিজেপি কীভাবে আমার এবং আমাদের বোলপুরের আইসির কথোপকথনের ফুটেজ পেল? কে তাদের দিল? এর পেছনে কোনও ষড়যন্ত্র নেই তো?’’

অনুব্রত আরও লেখেন, ‘‘তবুও আমি বলছি, কোনও পুলিশ বন্ধু যদি আমাকে ভুল বোঝে, তবে আমি দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।’’ চিঠির নীচে তাঁর হস্তাক্ষর এবং তারিখও উল্লেখ রয়েছে। পুলিশমন্ত্রীকে পাঠানো এই চিঠির ছবি প্রকাশ্যে আসতেই ‘বানান পুলিশদের’ মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, কারণ চিঠিটি অসংখ্য বানান ও ভাষাগত ভুলে ভরা (Anubrata Mondal Letter Mistake)।

ওই চিঠিতে যত্নসহকারে লেখা হয়নি, কারণ দাড়ি, কমার তেমন ব্যবহারের বালাই নেই। এছাড়া ‘মহুকুমা’ থেকে ‘দুক্ষিত’—এর মতো ভুল বানান পাঠকদের বিস্মিত করেছে। যদিও শেষের দিকে কেউ কলমের খোঁচায় কিছু শব্দের সঠিক বানান সংশোধন করার চেষ্টা করেছেন, তবুও বেশ কয়েকটি ভুল তাঁদের নজর এড়িয়ে গেছে।

এরপরই দলের নির্দেশে প্রথম চিঠি পাঠানোর প্রায় ৫০ মিনিট পর অনুব্রত মণ্ডল দ্বিতীয় চিঠি পাঠান, যেখানে তাঁর বক্তব্য আরও সংক্ষিপ্ত। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, দলের শীর্ষ নেতৃত্বই তাঁকে বয়ান বদলে ফের চিঠি পাঠানোর পরামর্শ দেন।

অন্য দিকে, ৩টা ১০ মিনিটে পাঠানো প্রথম চিঠিতে অনুব্রত মণ্ডল লিখেছিলেন, ‘‘সাম্প্রতিক ঘটনায় আমি দুঃখিত। দিদির পুলিশের কাছে একবার কেন, শতবার ক্ষমা চাইতে পারি। আমি নানা রকম ওষুধ গ্রহণ করি, আর দিদির পুলিশের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ তুললে আমার মাথা গরম হয়ে যায়। সত্যিই আমি দুঃখিত।’’ ৫০ মিনিট পর তিনি বয়ান পরিবর্তন করে দ্বিতীয় চিঠি লেখেন, যা ৪টের সময় তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত বক্সীকে উদ্দেশ্য করে পাঠানো হয়। সংক্ষিপ্ত এই চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘আশা করি তুমি ভালো আছো। আমার প্রণাম নিও। সাম্প্রতিক ঘটনার জন্য আমি সকল স্তরের কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।’’ তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, প্রথম চিঠি পাঠানোর পর দল থেকে অনুব্রতকে জানানো হয়েছিল যে, তাঁর বিস্তারিত বক্তব্য দলের প্রয়োজন নেই। তাঁকে সংক্ষিপ্তভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। সেই পরামর্শ মেনে নিয়ে তিনি দ্বিতীয় চিঠিটি লেখেন।

পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী, বোলপুর থানার আইসি-কে হুমকি দেওয়া ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহারের অভিযোগে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-র ২২৪ (সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও কর্তব্যরত কর্মীকে হুমকি), ১৩২ (সরকারি কর্মচারীকে হেনস্থা), ৭৫ (শ্লীলতাহানি ও হেনস্থা) এবং ৩৫১ (হুমকি) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। বিকেলে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে পুলিশ তাঁকে নোটিস প্রদান করে। জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Comments are closed.