ডিজিটাল ডেস্ক, ৪ জুন : বীরভূমের ‘বাঘের গর্জন’ কি মিলিয়ে যাচ্ছে? কেষ্টর যবনিকা পতনের সময় আসন্ন? সেরকমই আভাস মিলছে রাজনৈতিক মহল সূত্রে (Anubrata Mondal Update)। একদিকে অনুব্রত মণ্ডলের জেলা সভাপতির পদ চলে যায়। সাথেই বোলপুরের আইসি লিটন হালদার কে কদর্য ভাষায় গালিগালাজ করার কারণে চাপে রয়েছেন তিনি। তার মাঝেই এবার কাজল কেষ্ট দ্বন্দ্ব আরো উসকে গেল সাঁইথিয়ার বনগ্রাম পঞ্চায়েতের কেষ্ট অনুগামী ছেড়ে কাজল অনুগামী হওয়াতে।
প্রসঙ্গত আইসির সঙ্গে অডিও ভাইরালের পর ঘরে বাইরে চাপে অনুব্রত। এবার সাঁইথিয়া ব্লকের বনগ্রামের পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান সহ সমস্ত সদস্য সদস্যা অনুব্রত গোষ্ঠী ছেড়ে যোগ দিলেন কাজল শেখের গোষ্ঠীতে। বুধবার নানুর বিধানসভার কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েতের বনডাঙ্গা তৃণমূল কার্যালয়ে তারা এসে কাজল শেখের অনুগামী হয়ে আগামীতে তৃণমূলে থাকবেন বলে জানান। গুণগান পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, তাদের এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ আটকে রয়েছে। সেই বিষয়ে অনুব্রত মণ্ডল কে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা হচ্ছিল না। প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক কাজ করতেও বাধা পাচ্ছিলেন। তাই পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান সকল সদস্য সদস্যা, পঞ্চায়েত সমিতির সকলেই, প্রত্যেক বুথের সভাপতি সহ-সভাপতি সহ সকলেই আগামী দিনের কাজল শেখের নেতৃত্বে তৃণমূল দল করবেন ও লড়াই করবেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত অনুব্রত মণ্ডল বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদার কে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে একটি অডিও পাওয়া যায় (Anubrata Mondal Viral Audio)। সেই ওডিও ক্লপ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
IC-কে যথেচ্ছ গালাগালি অনুব্রতর! আইসি-র স্ত্রী-মাকে নিয়ে কদর্য গালাগালি অনুব্রতর। বীরভূমের বোলপুর থানার আইসি-কে ফোনে হুমকি। থানা থেকে চুল ধরে টেনে মারার হুমকি।আইসির বদলির দাবিতে থানা ঘেরাওয়ের হুমকি। অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি NKTV বাংলা।
সেই প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার আমানদ্বীপ প্রেস মিট করেন। তিনি জানিয়েছেন, এক রাজনৈতিক নেতা বোলপুরের আইসি লিটন হালদার কে দুই দিন আগে বোলপুরের এক নেতা ফোন করে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কথা বলেছেন। তার জন্য ইতিমধ্যেই বোলপুর আইসি অভিযোগ জানিয়েছিলেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের করেছে। সেই সম্পর্কিত যা যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন তা নেবে পুলিশ। এমনকি কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি কি কি ধারায় এই মামলা রুজু করা হয়েছে সেই সম্পর্কিত বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে।
এরপরেই দলের নির্দেশে লিখিতভাবে পুলিশের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন বীরভূমের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal New Apology Letter)। এরপর ভিডিওবার্তায়ও পুলিশের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। তিনি স্বীকার করেছেন যে, ভাইরাল হওয়া অডিয়ো ক্লিপে ‘‘অনুব্রত মণ্ডল বলছি’’ বলে যে কণ্ঠ শোনা গেছে, সেটি তাঁরই। অনুব্রত দাবি করেছেন, তিনি পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বরাবরই সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন এবং সাধারণত পুলিশ সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করেন না। তবে ‘সেদিন’ একটি বিশেষ পরিস্থিতির কারণে ব্যতিক্রম ঘটেছিল।
দলের নির্দেশে প্রথম চিঠি পাঠানোর প্রায় ৫০ মিনিট পর অনুব্রত মণ্ডল দ্বিতীয় চিঠি পাঠান, যেখানে তাঁর বক্তব্য আরও সংক্ষিপ্ত। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, দলের শীর্ষ নেতৃত্বই তাঁকে বয়ান বদলে ফের চিঠি পাঠানোর পরামর্শ দেন।
তবে দুপুরের পর পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। দলের পক্ষ থেকে তাঁকে চার ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়। মিনিট চল্লিশের মধ্যে তিনি লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়ে নেন। কিছুক্ষণ পর ভিডিওবার্তাতেও পুলিশের কাছে ক্ষমা চান তিনি।