Arambagh Flood Situation:উদ্বেগে আরামবাগবাসী,বন্যা পরিস্থিতে তৎপর প্রশাসন

8

ডিজিটাল ডেস্ক ২১জুনঃনিম্নচাপের বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে আরামবাগ মহকুমার একাংশে প্লাবনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। মহকুমার সব নদনদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে। শুক্রবার পর্যন্ত কোনও এলাকা প্লাবিত না হলেও প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এরই মধ্যে আরামবাগ ও গোঘাটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হল। আগেই আরামবাগ শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ড দ্বারকেশ্বরের জলে প্লাবিত হয়েছিল। বহু বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছিল। এদিন সেই জল কমতে শুরু করেছে। বাঁকুড়া,পুরুলিয়ায় বৃষ্টি কমে যাওয়ায় দ্বারকেশ্বর নদের জলস্তরও কমেছে। এদিকে গোঘাটের পশ্চিমপাড়া এলাাকতেও চাষের জমি থেকে জল নামতে শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে এদিন অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সহ নবান্নের তিন কর্তা পরিদর্শনে আসেন। তাঁরা প্রথমে আরামবাগে মহকুমা শাসকের অফিসে বৈঠক করেন। পরে খানাকুলের বিভিন্ন জায়গায় নির্মীয়মাণ নদী বাঁধের এলাকা ঘুরে দেখেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁধ ও রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের আশ্বাস দেওয়া হয়। বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করে গোঘাট ও খানাকুলের শতাধিক প্রাইমারি, জুনিয়র ও হাইস্কুল ছুটির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সেখানেই স্কুল খুলবে ( Arambagh Flood Situation)।

সংসদের চেয়ারম্যান শিল্পা নন্দী বলেন,হুগলি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বন্যা পরিস্থিতির কথা ভেবে ৭৭টি স্কুলে ছুটির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সেখানেই পঠনপাঠন হবে। আরামবাগের এসআই রথীন বিশ্বাস বলেন, ৪৭টি জুনিয়র এবং হাইস্কুলেও পঠনপাঠন বন্ধের নির্দেশ এসেছে। সেই প্রতিষ্ঠিানগুলিকে প্রয়োজনে ত্রাণ শিবির হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিম্নচাপের জেরে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় প্রবল বর্ষণ হয়েছে। সেই জল দ্বারকেশ্বর নদ হয়ে গোঘাট,আরামবাগ হয়ে খানাকুলের রূপনারায়ণে মিশছে। পূর্বাভাস মতো শুক্রবার থেকেই জলস্তর বেড়ে যায়। ডিভিসির ছাড়া জলে ফুঁসছে মুণ্ডেশ্বরী নদীও। খানাকুলের মারোখানার বাসিন্দা সুজিত পাল বলেন, মুণ্ডেশ্বরী ও রূপনারায়ণ নদে জল বাড়ছে। দুই নদীতেই জলের স্রোতও তীব্র। তবে এখনই উপচে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। ধান্যঘোরীর বাসিন্দা সাহেব পোড়ে বলেন, এখানে বাঁধের কাজ চলছে। বাঁধের উপর থেকে জলেরস্তর এখনও কিছুটা নীচে রয়েছে। যে কোনও সময় কানায় কনায় হয়ে যেতে পারে।

এদিন অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সহ নবান্নের তিন শীর্ষ কর্তারা আরামবাগে এনিয়ে বৈঠক করেন। পরে নদী বাঁধ পরিদর্শনও করেন। সঙ্গে ছিলেন আরামবাগের সংসদ সদস্য মিতালি বাগ,জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া, জেলাশাসক মুক্তা আর্য, হুগলি গ্রামীণের অতিরিক্ত পুলিস সুপার কৃশানু রায় প্রমুখ। তাঁরা খানাকুলের-১ ও ২ ব্লকের হানুয়া, বলাইচক, বালিপুর, পূর্ব রাধানগর প্রভৃতি এলাকার নদী বাঁধের কাজ খতিয়ে দেখেন। হানুয়ায় অতিরিক্ত মুখ্য সচিব বলেন, জুনের মধ্যেই নদী বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যাবে। প্রশাসন সবস্তরে সমন্বয় রেখে কাজ করছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন অতিরিক্ত মুখ্য সচিব বাঁধ নির্মাণ নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। কোথাও কোথাও কাজের গতি বাড়াতেও বলেছেন। আরামবাগের সাংসদ বলেন, বাঁধের কাজ চলছে। আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার কথা বলেছি। আরামবাগ শহরের বাঁধপাড়া এলাকায় এদিন বৃষ্টির জল জমে যায়। পরে পুরসভা পাম্প লাগিয়ে ওই জল বের করে দেয়। পুরসভার চেয়ারম্যান সমীর ভাণ্ডারী বলেন, দ্বারকেশ্বরে জল নামছে। তবু সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা সেরে রেখেছি।