ডিজিটাল ডেস্ক ২১জুনঃ শিয়ালদহ ডিভিশনের তরফে যাত্রী নিরাপত্তা ও ভ্রমণের অভিজ্ঞতা উন্নত করতে বিধাননগর রেলস্টেশনকে ‘ভেন্ডর-মুক্ত’ স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করার পথে হাঁটা হয়েছে। পাশাপাশি, দমদম, বিধাননগরের মতো অত্যন্ত জনবহুল স্টেশনগুলিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হল — যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, স্টেশনে চলাচল আরও সুষ্ঠু করা, যানজট কমানো এবং স্টেশন চত্বরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সচল রাখা। স্টেশনে অপ্রয়োজনীয় ভিড় রোধ এবং অননুমোদিত বিক্রেতাদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতেই রেলের এই পরিকল্পনা (Big Change In Dumdum-Bidhannagar)।
সাধারণ দিনে বিধাননগর স্টেশনে প্রায় ১.৭ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন যার মধ্যে আমরা কেবল সকাল ও সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে ১ লক্ষেরও বেশি যাত্রী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা লাভ করি। দমদম স্টেশনে প্রায় ১.৫ লক্ষ যাত্রীর সমাগম হয়, যার ফলে এই ২টি স্টেশনে বিপুল সংখ্যক যাত্রী ভিড়ের সম্মুখীন হন,যা রেলকে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান খুঁজতে বাধ্য করেছে।
১. ভেন্ডর-মুক্ত স্টেশন ঘোষণা:
বিধাননগর স্টেশনে যেসব অননুমোদিত ভ্রাম্যমাণ হকার বা বিক্রেতা দীর্ঘদিন ধরে জায়গা দখল করে রাখছেন, তাদের অপসারণ করা হবে। শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত হকারদের নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করা হবে। রেল সূত্রে খবর, স্টেশনের সৌন্দর্যায়ন ও সুরক্ষা পরিকল্পনার সঙ্গেই যুক্ত এই পদক্ষেপ।
২. জনবহুল স্টেশনগুলিতে বিশেষ নজর:
দমদম ও বিধাননগর ছাড়াও অন্য ব্যস্ত স্টেশনগুলিতেও বাড়ানো হচ্ছে নজরদারি। নিরাপত্তা বাহিনী এবং রেল পুলিশকে বেশি করে মোতায়েন করা হবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে।
৩. যানজট কমাতে রিকশা-অটো নিয়ন্ত্রণ:
স্টেশনের বাইরের অটো ও রিকশা স্ট্যান্ডগুলি আরও নিয়মিতভাবে পরিচালিত হবে। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তায় রুট ম্যানেজমেন্ট এবং যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
৪. নজরদারির জন্য আধুনিক প্রযুক্তি:
স্টেশন এলাকাজুড়ে বসানো হবে সিসিটিভি ক্যামেরা, যেগুলির মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং চালানো হবে। নিরাপত্তা বাহিনী সরাসরি এই ক্যামেরার মাধ্যমে যাত্রীদের গতিবিধির উপর নজর রাখতে পারবে।
৫. যাত্রীদের জন্য সচেতনতা অভিযান:
নতুন এই ভেন্ডর-মুক্ত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, যাত্রীদের জন্য সচেতনতা মূলক প্রচার অভিযান চালানো হবে। পোস্টার, ডিজিটাল সাইনবোর্ড এবং ঘোষণার মাধ্যমে যাত্রীদের জানানো হবে কী কী পরিবর্তন আসছে।
যাত্রীদের আরও ভাল টিকিটিং সুবিধা প্রদানের জন্য দমদমের দ্বিতীয় প্রবেশদ্বারে আরপিএফ ব্যারাকের কাছে নতুন টিকিট বুকিং অফিস চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে।
রেলের মতে, কলকাতা মেট্রোর অরেঞ্জ ও ইয়েলো লাইনের সম্প্রসারণের কারণে শিয়ালদহ ডিভিশনের স্টেশনগুলিতে ভিড় ক্রমাগত বাড়ছে। এই মুহূর্তে বিধাননগর স্টেশনে প্রতিদিন ২১৬টি এবং দমদম স্টেশনে ২২২টি লোকাল ট্রেন আসা-যাওয়া করে।
আগামীদিনে দমদম ক্যান্টনমেন্টেও তৈরি হতে চলেছে মেট্রো। সেক্ষেত্রে এই স্টেশনকে আগামী দিনে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাব হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
রেলের মতে, ইয়েলো লাইন (নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর) ও অরেঞ্জ লাইনের (নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর) সম্প্রসারণে দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন সল্টলেক, নিউ টাউন এবং বনগাঁ-হাসনাবাদ শাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ‘হাব স্টেশন’ হয়ে উঠবে।