ডিজিটাল ডেস্ক, ১৬ মে : শুক্রবার তৃণমূল দলের প্রকাশিত জেলা সভাপতি ও চেয়ারপার্সনদের তালিকা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, জেলায় দলের সংগঠন পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গঠিত কোর কমিটির ওপর। ন’সদস্যের এই কমিটিতে অনুব্রত মণ্ডল রয়েছেন। তবে জেলার চেয়ারপার্সন পদটি অপরিবর্তিত থাকছে, যেখানে দায়িত্ব পালন করবেন রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় (Birbhum TMC News)।
জেলা তৃণমূলের অনেকেই মনে করছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গঠিত কোর কমিটিকে কার্যত ‘অপ্রাসঙ্গিক’ করে দিয়ে ‘অপারেশন বোলপুর’ চালাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল। গত দেড় মাস ধরে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির কোনো বৈঠক হয়নি। এরই মধ্যে অনুব্রত তাঁর পারিষদদের নিয়ে ব্লকে ব্লকে কর্মসূচি করে ২০২৬ সালের ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তবে তাঁর সেই কর্মসূচি থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন কোর কমিটির অন্যতম সদস্য তথা বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। এই খবর প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ তুলে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত ২০২২ সালে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর বীরভূমে কোর কমিটি গঠন করেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যেখানে কাজল শেখকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। তবে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরেও তিনি জেলা সভাপতির পদে বহাল ছিলেন। পরে যখন তিনি জেল থেকে মুক্তি পান, তাঁকে নতুন করে সেই পদে বসানোর প্রয়োজন হয়নি, কারণ সভাপতির দায়িত্ব আগেই তাঁর ছিল। এই পদে থাকার সুবাদেই তিনি কোর কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হন। দলনেত্রী মমতা বারবার নির্দেশ দিয়েছিলেন যে কোর কমিটির সঙ্গে সমন্বয় রেখেই অনুব্রতকে দল পরিচালনা করতে হবে। কিন্তু তাঁর কাজকর্মে বারবার কোর কমিটিকে এড়িয়ে চলার প্রবণতা দেখা যায়, যা জেলার নেতাদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভের কারণ হয়ে ওঠে। দলীয় সূত্রের দাবি, এই অসন্তোষ শীর্ষ নেতৃত্বের কানেও পৌঁছায়। এই পরিস্থিতিতে দলের তরফে কড়া বার্তা দিয়ে বীরভূম জেলা সভাপতির পদই বাতিল করা হয়েছে।
দলের একটি অংশের মতে, অনুব্রত মণ্ডল জেলে থাকাকালীনও লোকসভা নির্বাচনে বীরভূমে ভালো ফল করেছে তৃণমূল। সংগঠনের দায়িত্ব কোর কমিটির হাতে থাকলেও তারা দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করে জেলার দু’টি আসনে দলের জয় নিশ্চিত করেছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যেখানে দুবরাজপুরে বিজেপি জয়লাভ করেছিল, সেখানেও এবার তৃণমূল লিড পেয়েছে। ফলে অনুব্রত ছাড়া দল যে জেলায় সাফল্য অর্জন করতে পারে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নেতৃত্ব। তবে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠদের দাবি, দলের এই ভালো ফল আসলে তাঁর সাজানো সংগঠনের ভিত্তিতেই হয়েছে।
Comments are closed.