Calcutta High Court on 100 Days Work : আগামী ১লা অগস্ট থেকে ফের কেন্দ্রকে ১০০ দিনের প্রকল্প চালু করার নির্দেশ হাইকোর্টের

6

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৮ জুন : আগামী ১লা অগস্ট থেকে ফের কেন্দ্রকে ১০০ দিনের প্রকল্প চালু করার নির্দেশ হাইকোর্টের। পাশাপাশি কোনও কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে অনন্তকালের জন্য ঠান্ডা ঘরে পাঠানো যায় না বলে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির। দুর্নীতি রোধে যে কোনও রকম শর্ত আরোপ করতে পারবে কেন্দ্র এমন নির্দেশও দিয়েছেন প্রধান বিচারপতির।

শুধু পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিশেষ শর্ত আরোপ করতে পারবে কেন্দ্র বলেও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতির। শুধু পশ্চিমবঙ্গের জন্য যে কোনও নিয়ম তৈরী করতে পারবে কেন্দ্র বলে নির্দেশ। এছাড়াও কেন্দ্র চাইলে পোর্টালের মাধ্যমে সরাসরি নির্দিষ্ট ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে টাকা দিতে পারবে কেন্দ্র বলে জানানো হয়েছে। প্রতিটি জেলায় কেন্দ্র দুর্নীতির তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

মামলার শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন— “শুরু থেকেই বলেছি, ১০টা আপেলের মধ্যে কয়েকটি পচা হতে পারে, কিন্তু বাকিগুলো তো স্বচ্ছ?” তিনি আরও বলেন, “যা হয়েছে, তা অতীত। কিন্তু প্রায় তিন বছর ধরে প্রকল্প বন্ধ রয়েছে। এবার নতুন করে চালু করতেই হবে। কেন্দ্র এই প্রকল্প স্থগিত রাখতে পারে না।” প্রধান বিচারপতি এরপর জুলাই বা আগস্ট থেকে প্রকল্প চালু করার সম্ভাবনা নিয়ে ভাবনার পরামর্শ দেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন যে দুর্নীতি রোধে কেন্দ্র শর্ত আরোপ ও তদারকি করতে পারে, তবে কোনও প্রকল্প অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা যায় না। একশ দিনের কাজ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, হিন্দি বলয়ের বিভিন্ন রাজ্যে দেখা গেছে, এমনকি গুজরাতেও সম্প্রতি দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তবে, পশ্চিমবঙ্গে প্রকল্প বন্ধ রাখা এবং পরপর দুটি বাজেটে কোনও অর্থ বরাদ্দ না করার পেছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে বলে অনেকের ধারণা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এবং বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, কেন্দ্রের অবস্থান উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। গ্রামের মানুষ সরকারকে ‘মাই-বাপ’ বলে মনে করেন, তাই কয়েকজনের দুর্নীতির কারণে সবার কাজের অধিকার কেড়ে নেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। আদালতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে কাজ করা ব্যক্তিদের বাধা দিতে চায় না কেন্দ্র। কিন্তু তারা সত্যিই কাজ করেছেন কিনা, সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার? এছাড়া, রাজ্য যে বেআইনি ভাবে ব্যবহৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত করেছে, তা কেন্দ্রকে ফেরত দিতে হবে। ভবিষ্যতে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হলে পুরো প্রকল্পের ওপর নজরদারি কেন্দ্রের হাতে রাখতে হবে, যার জন্য নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হবে। পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।

কেন্দ্রের এই যুক্তি দুর্বল মনে হয়েছে অনেকের কাছে, কারণ নজরদারি ব্যবস্থা চালু করতে কেন তিন বছর সময় লাগল, সেটাই বড় প্রশ্ন। এই দীর্ঘ সময় ধরে লক্ষ লক্ষ গ্রামবাসী কাজ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, যার দায় কার, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। অন্যদিকে, রাজ্য সরকার আদালতে জানিয়েছে যে নোডাল অফিসারের প্রয়োজন নেই, কারণ প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি পোর্টালের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তাই যেকোনো ভুলত্রুটি তাৎক্ষণিকভাবে নজরে আসে, এবং অতিরিক্ত পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন নেই বলে তাদের দাবি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

রাজ্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে, কারণ একশ দিনের কাজ প্রকল্পে ধারাবাহিকভাবে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তা বন্ধ করতে প্রশাসন আগেভাগে তৎপর হয়নি। তবে, কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ অনেক মানুষের জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করছে। দীর্ঘদিন পর নতুন করে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় অসংখ্য পরিবার আশার আলো দেখছে।