ডিজিটাল ডেস্ক, ২ অগাস্ট : মর্মান্তিক দুর্ঘটনা উত্তর দমদমে—ঘরের জমা জলে ডুবে মৃত্যু হল এক শিশুকন্যার (Child Death Due To Water Logging)। শনিবার সকালে দেবীনগর এলাকায় ঘটে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা। হঠাৎ এই মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার, স্তব্ধ গোটা এলাকা। চারপাশে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
উত্তর দমদম পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগরের বাসিন্দা পাপন ঘোড়াই। প্রায় ছ’মাস আগে তাঁর স্ত্রী একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন, যার নাম রাখা হয় ঋষিকা। সম্প্রতি টানা বৃষ্টির ফলে দেবীনগরের বিভিন্ন জায়গার মতো পাপনবাবুর বাড়িতেও জল জমে যায়। ঘরের ভেতর হাঁটুর সমান জল দাঁড়িয়ে থাকে দিনের পর দিন। এই জলমগ্ন অবস্থার মধ্যেই পরিবারটি বাড়িতেই বসবাস করছিল।
শনিবার সকালে বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না পাপন ঘোড়াই। ছয় মাসের কন্যা ঋষিকাকে খাটে শুইয়ে রেখে গৃহকর্মে ব্যস্ত ছিলেন তাঁর মা। কাজের ফাঁকে একসময় শৌচালয়ে যান তিনি। ঠিক সেই সময়ই ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা। খাটে পাশ ফিরে জলে পড়ে যায় ছোট্ট ঋষিকা। ফিরে এসে মেয়েকে খাটে না পেয়ে খোঁজ শুরু করেন মা। ঘরের জমা জলে মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার জেরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা দেবীনগর এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ উগরে দিয়ে অভিযোগ করেছেন, জমা জলের কারণেই প্রাণ গেল একরত্তি শিশুর। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় জলনিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, অথচ কোনও স্থায়ী সমাধান হয়নি। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। এদিকে শিশুর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে পাড়া-প্রতিবেশী, সকলেই। এই কঠিন সময়ে পরিবারকে মানসিকভাবে সাহারা দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই দেবীনগর ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টির জল জমে থাকে, কিন্তু পুরসভার তরফে জল নিষ্কাশনের কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নিকাশি ব্যবস্থার এই চূড়ান্ত অব্যবস্থার ফলেই ঘটেছে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা বলে মনে করছেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হলে এ ধরনের দুঃখজনক পরিণতি এড়ানো যেত।