CID On Khejuri Murder : খেজুরিতে জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে সিআইডি

43

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৬ অগাস্ট : খেজুরিতে দুই বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের দায়িত্ব সিআইডিকে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার মামলার রায় ঘোষণা করে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ স্পষ্টভাবে জানান, এই মামলার তদন্ত সিবিআই নয়, করবে সিআইডি (CID On Khejuri Murder)।

এডিজি, সিআইডি-র তত্ত্বাবধানে ডিআইজি পদমর্যাদার এক আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) গঠন করতে হবে। ওই টিমে থাকবেন সিআইডির হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরাও।

তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্ট আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে জমা দিতে হবে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থাকে। সেদিনই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

সোমবারের শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন। তিনি মন্তব্য করেন, “সিবিআই এখন গ্যালারি শো করছে।” মামলাকারীর পক্ষ থেকে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলা হলে বলা হয়, “আমরা রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা করতে পারছি না।”

এই বক্তব্যের পর বিচারপতি পর্যবেক্ষণ দেন যে, সিবিআই-এর বর্তমান কার্যকলাপ অনেকটা লোকদেখানো হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, পরে প্রয়োজনে এই বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে।

এরপরই তিনি স্পষ্ট করে দেন, ডিআইজি, সিআইডির নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত চালানো হবে। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার আদালতের রায়ে সেই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত করেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।

গত ১১ জুলাই মহরম উপলক্ষে খেজুরি থানার ভাঙনমারি গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। পরদিন সকালে সেই অনুষ্ঠানস্থল থেকে কিছু দূরে দুই যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতরা হলেন সুধীর পাইক ও সুজিত দাস। পরিবারের দাবি, তাঁদের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে আয়োজকদের বক্তব্য, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে। শাসকদল তৃণমূলও একই দাবি করে।

এরই মধ্যে বিজেপির পক্ষ থেকে গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়—ধর্মীয় কারণে খুন করা হয়েছে ওই দুই যুবককে। ফলে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতর। বিতর্ক ছড়ায় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট নিয়েও। প্রথমে পুলিশ জানায়, রিপোর্ট অনুযায়ী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তা মানতে নারাজ হয়ে মৃতদের পরিবারের সদস্যরা দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন।

দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে উঠে আসে ভিন্ন চিত্র—দু’জনের শরীরেই আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। একই দেহের দুটি ভিন্ন রিপোর্ট কীভাবে এল, তা নিয়ে শুরু হয় জোর বিতর্ক এবং প্রশ্ন ওঠে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে।

এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট মামলার তদন্তভার রাজ্য পুলিশের হাতে তুলে দেয়, এবং নির্দেশ দেয় সিআইডি-র অধীনে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্ত চালানোর।