কলকাতা, ২৬ এপ্রিল: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারানো অশিক্ষক কর্মীদের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য রাজ্য সরকার বিকল্প বেতনের ব্যবস্থা করছে। যত দিন না আদালতে চূড়ান্ত রায় হচ্ছে, তত দিন এই বেতন দেওয়া হবে—শনিবার এমনটাই জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, আগামী মে মাসেই সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে রাজ্য সরকার। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি অশিক্ষক কর্মীদের ক্ষেত্রেও এই রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হবে।
শনিবার নবান্ন সভাঘরে চাকরি হারানো অশিক্ষক কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেই বৈঠক চলাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার চাকরিহারা কর্মীদের পরিস্থিতিতে গভীরভাবে ব্যথিত। আদালতের রায় উপেক্ষা করা সম্ভব নয়, তবে যাঁরা কাজ হারিয়েছেন, তাঁদের সংসার কীভাবে চলবে, তা নিয়ে রাজ্যও সমানভাবে উদ্বিগ্ন।
এই প্রেক্ষিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরিহারাদের জন্য বিকল্প বেতনের প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্রুপ সি কর্মীদের মাসিক ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেবে রাজ্যের শ্রমদপ্তর। এই সহায়তায় শিক্ষা দপ্তরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যেভাবে ডানলপের বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার শ্রমিকদের রাজ্য সরকার মাসে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়, ঠিক তেমনভাবেই এবার গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-র চাকরিহারাদের জন্যও আর্থিক সাহায্যের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যদি তাঁরা রাজি থাকেন, তাহলে এই অর্থসাহায্য দেওয়া হবে। যতদিন না আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হয়, ততদিন এই সহায়তা চালু থাকবে।”
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল হওয়ায় চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫২ জন। এই পরিস্থিতিতে ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে আপাতত কাজ চালিয়ে যেতে পারেন এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় মেলে, সেই দাবিতে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। সেখানে আদালত নিয়োগের জন্য সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়। পাশাপাশি জানায়, ততদিন পর্যন্ত ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা তাঁদের চাকরিতে বহাল থাকবেন এবং বেতনও পাবেন।
তবে অশিক্ষক কর্মীদের কাজে ফেরার অনুমতি দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। সেই কারণেই তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এবার তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড় বার্তা দিলেন—ঘোষণা করলেন মাসিক ভাতার।
Comments are closed.