ডিজিটাল ডেস্ক, ২২ এপ্রিল: “নিশ্চিন্তে স্কুলে যান, যোগ্য-অযোগ্যর লিস্ট নিয়ে ভাবতে হবে না,” মেদিনীপুরের সভা থেকে ফের ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আপনারা স্কুলে যান, বাকি দায়িত্ব রাজ্য সরকারের।” নাম না করে তিনি ফের বাম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে তীর্যক মন্তব্য করেন। বলেন, “যদি কলকাতায় থাকতাম, তো এক মিনিটে এই সমস্যার সমাধান করে দিতাম।”
মঙ্গলবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠে প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী চাকরিহারাদের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে সোমবার রাত থেকে এসএসসি ভবনের বাইরে ধরনায় বসেছেন চাকরিহারা। ভিতরে আটকে রয়েছেন এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার-সহ ১৬ জন। আন্দোলনকারীদের দাবি, তালিকা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত ধরনা চলবে। এসবের মধ্যে, মেদিনীপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
প্রয়োজনে রাজ্য আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে আপনারা চাকরি হারিয়েছিলেন, টাকা বন্ধ হয়েছিল। আমরা রিভিউ পিটিশন করেছিলাম, যাতে আপনাদের মাইনে পাওয়া যায়। আর গ্রুপ সি ও ডি যেগুলি বাতিল হয়েছে, আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে, দরকার হলে আবার রিভিউ করব। এতে বিশ্বাস রাখতে পারেন। যারা চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে, তাদের উপর বিশ্বাস রাখুন। যারা চাকরি কেড়ে নিচ্ছে, তাদের উপর বিশ্বাস রাখবেন না।”
এছাড়াও বিরোধীদের কড়া সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বাংলায় কিছু লোক আছেন, যারা শুধুমাত্র চাকরি খাওয়ার জন্য বসে আছেন। জনগণের কাজ করেন না, শুধু কোর্টে গিয়ে পিআইএল (জনস্বার্থ মামলা) করেন। এর জন্য কোর্ট দায়ী নয়, আমরা চাকরি দেব আর তারা চাকরি খাবে।”
বিরোধীদের আরও একহাত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আবার হাই কোর্টে একটা মামলা হয়ে বসে আছেন। প্রাথমিকে ৩৫ হাজার চাকরি বাতিল করতে হবে। মানুষদের চাকরি কেড়ে নেওয়ার আগে তাদের পরিবার, সন্তান এসবের কথা ভাবা উচিত।”
‘যোগ্য-অযোগ্যদের’ তালিকা প্রকাশের দাবিতে চাকরিহারাদের অবস্থান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গতকাল সন্ধ্যা থেকে অন্তত ১০ বার কথা বলেছি। আমি যদি কলকাতায় থাকতাম, এক সেকেন্ডে এই সমস্যার সমাধান করে দিতে পারতাম।” চাকরিহারাদের একাংশের প্রতি তাঁর বার্তা, “কিছু মানুষ অনড় রয়েছেন যে, ‘যোগ্য’ ও ‘অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। কেন অন্যদের কথায় পা দিচ্ছেন? কে যোগ্য আর কে অযোগ্য, সেটা দেখার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। কোর্টের নির্দেশ আমাদের দেখতে হবে। আপনার কাজ হচ্ছে, চাকরি আছে কি না সেটা নিশ্চিত করা, বেতন পাচ্ছেন কি না, সেটা দেখা।”