CM VS GAURAV : অসমে কি অবসান হতে যাচ্ছে হিমন্ত যুগের? এপিসিসি(APCC) সভাপতির আসনে বসেই সেই প্রশ্ন উসকে দিলেন গৌরব গগৈ! কারণ গৌরব গগৈর কাঁধে গুরুদায়িত্ব দিয়ে কংগ্রেস হাইকমান্ড বুঝিয়ে দিয়েছে, ২৬-এ গৌরবই দলের মুখ।
গৌরব অপ্রতিরোধ্য, গৌরব অপরাজেয়, গৌরবই একমাত্র প্রতিপক্ষ লোকসভা নির্বাচনের পর তা টের পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্তবিশ্ব শর্মা। কারণ, ডিলিমিটেশন করেও আটকানো যায়নি গৌরবকে। যোরহাটে বিপুল ভোটে জয়ী হন গৌরব গগৈ।
শাসনযন্ত্রের বিরুদ্ধে একা কুম্ভের মতো লড়েছিলেন তরুণ তনয়। আর এই জয়ের নেপথ্যে ছিল হাজার হাজার মানুষের আবেগ।
যোরহাটে মানুষের আবেগের যে স্ফুলিঙ্গ দেখা গিয়েছিল, তা যে কোনও সময় হিমন্তের সোনার লঙ্কাকে গ্রাস করতে পারে। সেই শঙ্কা থেকেই নতুন চিত্রনাট্য লেখা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। শুরু হয়, গৌরব গগৈকে দেশদ্রোহী সাজানোর প্রয়াস!
হিমন্তবিশ্ব শর্মা ভেবেছিলেন, পাক ইস্যুতে কংগ্রেস হাইকমান্ডের কাছে গুরুত্ব হারাবেন গৌরব। কংগ্রেস ও গৌরবের মধ্যে বাড়বে মানসিক দূরত্ব। গৌরব কোনওদিন হতে পারবেন না এপিসিসি সভাপতি।
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে ঠিক একথাই বলেছেন গৌরব গগৈ। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যে সন্দেহের বীজ পুঁতেছিলেন, তা উপরে ফেলে দিয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড।
এবার কাজ করল না হিমন্তের কূটনীতি। অসমের রাজনীতির সব সমীকরণ বদলে দিল কংগ্রেস হাইকমান্ড।
আজ হিমন্তের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী গৌরব গগৈ। ২৬-এর লড়াই হবে গৌরব বনাম হিমন্তের মধ্যে। মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য বিনয়ী গৌরব লড়বেন রক্তচক্ষু হিমন্তের সঙ্গে। তাই ২৬-এ সহজ হবে না গেরুয়া শিবিরের লড়াই।
বদলে যেতে পারে বিজেপির সমীকরণ। পরিস্থিতি অনুকূল না হলে নির্বাচনের আগেই হিমন্তকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারে গেরুয়া শিবির। বিজেপিতে এমন অনেক নজির রয়েছে। ফলে গৌরবের নিযুক্তিতে কিছুটা হলেও অনিশ্চিত হয়ে গেল, হিমন্তের মুখ্যমন্ত্রী পদ। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর গৌরবের পাক ইস্যু নিয়ে নথি প্রকাশ করবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাতে কী হবে? মুখ্যমন্ত্রীর মতে, কংগ্রেসকে নিয়েই ডুববেন গৌরব গগৈ। কিন্তু বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন নবনিযুক্ত এপিসিসি সভাপতি। বিষয়টি নিয়ে গৌরব গগৈ বলেন, ‘আমার স্ত্রী এক বছর পাকিস্তানে কর্মরত ছিল, তখন আমি একবার পাকিস্তানে গিয়েছিলাম’। আমার দুই সন্তানও ব্রিটিশ নাগরিক।’
মুখ্যমন্ত্রী গৌরবের বিরুদ্ধে এই তিনটি প্রশ্নই উত্থাপন করেছিলেন। গৌরব গগৈ সেই তিন প্রশ্নের উত্তরও দিয়ে দিলেন। আর ISI লিঙ্ক নিয়েও যোগ্য জবাব দিলেন গৌবব গগৈ। তিনি বলেন, ‘বলিউডের সি গ্রেড সিনেমার মতোই চিত্রনাট্য লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী, ১০ সেপ্টেম্বর তা ফ্লপ হবে’।
যে ভয়ে এই চিত্রনাট্য লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তা কোনও কাজে আসবে বলে মনে হয় না। বাস্তব সত্য হল, ডিলিমিটেশন করেও গৌরবকে পরাজিত করা যায়নি। বাস্তব সত্য হল, পাকিস্তান-ISI কলঙ্ক দিয়েও এপিসিসি সভাপতি পদে গৌরবকে আটকানো যায়নি। বাস্তব সত্য হল, ২৬-এ গৌরবকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রজেক্ট করবে কংগ্রেস। ফলে ২৪-এর যোরহাটের স্ফুলিঙ্গ ২৬-এ দাবানলের রূপ নেয় কিনা, তাই হবে লক্ষ্যণীয়।
Comments are closed.