ডিজিটাল ডেস্ক, ৯ অগাস্ট : দিনদুপুরে গুলিচালনার ঘটনায় মৃত্যু হল স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলের। নিহত যুবকের নাম অমর রায়। এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রাথমিক সূত্রের খবর, অমর তৃণমূলের যুব সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, নাকি ব্যক্তিগত কোনও বিরোধ— তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। তবে যেভাবে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে খুন করা হয়েছে, তাতে স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তদন্তে নেমেছে পুলিশ (Cooch Behar Shoot Out)।
কোচবিহারের ২ নম্বর ব্লকের ডোডেয়ার হাট এলাকায় শনিবার দুপুরের পর ঘটে যায় চাঞ্চল্যকর শুটআউট। সূত্রের খবর, প্রতি সপ্তাহে ওই এলাকায় মঙ্গল ও শনিবার হাট বসে, ফলে হাটের দিনে ভিড় লেগেই থাকে। রাখির দিন হওয়ায় এদিনও জনসমাগম ছিল যথেষ্ট। সেই সময় হঠাৎই একটি বাইকে করে কয়েকজন ব্যক্তি হাট এলাকায় এসে হাজির হয়। এরপর কোনও রকম পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই প্রকাশ্য দিবালোকে, জনবহুল হাটের মধ্যেই গুলি চালানো হয়। এই ঘটনায় মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পুণ্ডিমারির ডাওয়াগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল নেত্রী কুন্তলা রায়ের ছেলে অমর রায় শনিবার দুপুরে এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ডোডেয়ার হাটে মাংস কিনতে গিয়েছিলেন। হাটে থাকাকালীন অমরের সঙ্গে বাইকে করে আসা কয়েকজন যুবকের কথা কাটাকাটি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সেই বচসার জেরে বাইক আরোহীরা আচমকাই অমরকে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে গুলি চালায়। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে ছোড়া গুলি সোজা অমরের মাথায় লাগে। তিনি ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন।
অমরের সঙ্গী বন্ধুও গুলিতে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ঘটনার পরই অভিযুক্তরা বাইকে চড়ে দ্রুত এলাকা ছাড়ে। গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে চরম আতঙ্ক।
ঘটনার পরই খবর দেওয়া হয় পুণ্ডিমারি থানায়। পুলিশ দ্রুত পৌঁছে যায় ঘটনাস্থলে। অমর রায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বলে জানা গেছে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁর সঙ্গে থাকা অপর যুবককে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তিনি এখনও সেখানেই চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পর এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। শুরু হয় তদন্ত। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, দুষ্কৃতীরা দুটি বাইকে করে এসেছিল। তাদের চিহ্নিত করে ধরতে তল্লাশি অভিযান চলছে।
এই ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান তৃণমূল মুখপাত্র ও প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। তিনি কড়া ভাষায় বলেন, “পুলিশ ও প্রশাসনের আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। কোচবিহারে একের পর এক তৃণমূল কর্মী-নেতার উপর হামলা হচ্ছে। এখন তো পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলেকেই দিনেদুপুরে গুলি করে খুন করা হচ্ছে! নিরাপত্তা ব্যবস্থা কোথায়?”
এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।