ডিজিটাল ডেস্ক, ২৯ জুলাই : শ্রাবণী মেলার সময় ঝাড়খণ্ডের দেওঘর জেলায় ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার সকালে মোহনপুর ব্লকের জামুনিয়া গ্রামের কাছে, শিব-পার্বতী মন্দিরের সংলগ্ন এলাকায়, একটি বাস ও গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান ১৮ জন কাঁওয়ার যাত্রী। জেলা প্রশাসনের মতে, আরও অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন (Deoghar Accident)।
জানা গিয়েছে, বাসটিতে প্রায় ৩৫ জন কাঁওয়ার যাত্রী ছিলেন, যাঁরা বৈদ্যনাথ ধামে জল অর্পণ করতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় উল্টো দিক থেকে আসা গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই একটি ট্রাক বাসটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে ঘটনাস্থলেই বহু মানুষ মারা যান। প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের হাসপাতালে পাঠায় এবং মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ পুণ্যার্থীদের নিয়ে একটি বাস যাচ্ছিল দেওঘরের বৈদ্যনাথধামের উদ্দেশে। সেই সময় দেওঘর-বাসুকিনাথ সড়কে জামুনিয়া চকের কাছে একটি গ্যাস সিলিন্ডারবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে বাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। ধাক্কা এতটাই প্রবল ছিল যে বাসটি কার্যত দুমড়ে-মুচড়ে যায়। স্থানীয়রা দ্রুত মোহনপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আহতদের তৎক্ষণাৎ অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলেই ৯ জনের মৃত্যু হয়, এবং আহতদের মধ্যে অধিকাংশের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
ঝাড়খণ্ড পুলিশের আইজি শৈলেন্দ্রকুমার সিনহা জানান, “৩২ আসনের বাসটি পুণ্যার্থীতে পূর্ণ ছিল। মোহনপুর থানা এলাকার জামুনিয়া জঙ্গলের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। কীভাবে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে প্রতিক্রিয়া জানান দেওঘরের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি লেখেন, “শ্রাবণ মাসে পবিত্র কানওয়ার যাত্রার সময়, আমার লোকসভা কেন্দ্র দেওঘরে এক মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় ১৮ জন পুণ্যার্থী প্রাণ হারিয়েছেন।”
ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আজ সকালে মোহনপুর ব্লকের জামুনিয়া চকের কাছে বাস দুর্ঘটনায় কাঁওয়ার যাত্রীদের মৃত্যুর খবর অত্যন্ত বেদনাদায়ক। জেলা প্রশাসন আহতদের চিকিৎসা এবং উদ্ধার ও ত্রাণকাজে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। আমি প্রার্থনা করি—বাবা বৈদ্যনাথ যেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ভক্তদের আত্মার শান্তি দান করেন এবং শোকাহত পরিবারগুলিকে এই কঠিন সময়ে সহ্য করার শক্তি প্রদান করেন।”